বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী-হক-বাঁধন তিনি একসময় লাক্স সুপারস্টার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন এরপর তিনি ছোট পর্দায় নিয়মিত কাজ করে দর্শকদের মনে জায়গা করতে সক্ষম হয়েছেন তাঁর অনবদ্য অভিনয় এবং নজরকাড়া গ্লামার্স দিয়ে তিনি নিজের জায়গাকে পাকাপোক্ত করে তুলেছেন যার ধারাবাহিকতায় তিনি রেখে চলেছেন এবার বড় পর্দায় অর্থাৎ সিনেমা অঙ্গনে
ছোটবেলার গল্প জানতে চাইলে বাঁধন বলেন, ‘এখন মনে হয় আমার ছোটবেলা আসলে খুবই ইন্টারেস্টিং ছিল। কিন্তু তখন খুব একটা ভালো লাগত না। আমার বাবা সরকারি চাকরি করতেন, বছরের মাঝখানে বদলি হয়ে যেতেন। এটা আমাকে পীড়া দিত, বছরের মাঝখানে অন্য স্কুলে আবার ভর্তি হওয়াটা। আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকেই, দেশটা খুব কাছ থেকে দেখেছি।’
যোগ করে বাধঁন আরও বলেন, ‘আমার শৈশবের খুব বড় অংশ জুড়ে আছে রাজবাড়ি। ওখানে তিনবছর ছিলাম। সেটা বাবার সর্বোচ্চ সময় থাকা। বাবা অনেক সৎ একজন অফিসার ছিলেন। যে কারণে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাই ঘন ঘন বদলিতে যেতে হয়েছিল উনাকে।’
সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘১৯ বছর বয়সে জীবনে ভয়াবহ একটি সময় পার করছিলাম। তখন থেকেই আমি সিভিয়ার ডিপ্রেশনের রোগী ছিলাম। আমার সুইসাইডাল টেনডেনসি ছিল। তখনই আমার লাক্সে আসা, লাক্স আমাকে নতুন একটি জীবন দিয়েছে। আমি সব সময় বলি, লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০০৬ আমাকে আমাকে নতুন জীবন দেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম।’
অল্পতেই অনেক খুশি থাকেন এ অভিনেত্রী। জানিয়ে বাধঁন বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে। উনার সঙ্গে কাজের সুবিধা ছিল যে, আমাকে খুব বেশি কাজ করতে হয়নি। দুই তিনটা কাজ করেছি, তাতেই আমি খুশি ছিলাম। আমি অল্পতেই অনেক খুশি হয়ে যাই।’
২০১০ সালে মশিউর হোসাইন সিদ্দিকি সনেটকে বিয়ে করেন বাঁধন। ২০১৪ সালে বিচ্ছেদ হয় তাদের। ক্যারিয়ারে তুঙ্গে থাকা অবস্থায় বিয়ে করেন বাঁধন। বিয়ে প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার তখন ফ্যামিলির প্রেশার ছিল। আমার ফ্যামিলিতে কেউ মিডিয়াতে কাজ করেননি। যেহেতু আমার আশেপাশের মানুষের মিডিয়াকে ভালো চোখে দেখেন না, তাই আমাকে মিডিয়া ছেড়ে দিতে হবে। তাই প্রতিষ্ঠিত কাউকে বিয়ে করতে হবে যাতে আমি আসলে কোনো রকমে এখান থেকে বের হতে পারি।’
বিয়ের সময়টাতে ৯টি ধারাবাহিকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছিলেন বাধঁন। হঠাৎ করেই সবাইকে না করে দেন তিনি। এ নিয়ে বাঁধনের অনুশোচনা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই বলেছি, আমি করব না। আমার কিন্তু তখন কোনো অনুশোচনা হয়নি। এটা নিয়ে আলোচনাও হয়নি। বিয়ের দুই মাসের মাথা কন্সিভ করেছি। তারপরও অনেকে প্রশ্ন তুলেছে, কেন আমি সংসার করতে পারিনি?’
আদালতের মাধ্যমে মেয়ের পুরো অভিভাবকত্ব পেয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি একটা মানুষ। সমাজের ছকে বেঁধে দেওয়া তথাকথিত নারীটা না। আমার মনে হয়ে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এতটাই কুৎসিত, সে ব্যবস্থায় একটা মেয়ে এটা বুঝতে পারার আগেই মারা যান। অথবা এমন বয়সে বোঝেন তখন আর তার কিছুই বলার থাকে না। আমি অন্তত এটা বুঝতে পেরেছি। এটা আমার সবচেয়ে বড় একটা অর্জন।’
বাঁধন মনে করেন প্রতিটি মানুষই ষ্ট্রং। তার ভাষায়, ‘হয়ত কেউ আমার মতো অনেক কিছুর মুখোমুখি হয়ে সেই শক্তিটা অর্জন করে। আমি আমার মেয়েকে এখন থেকেই ওই সাপোর্ট, ওই শক্তি দিয়ে বড় করতে চাই। যে তুমি একটা হিউম্যান বিং, তুমি যা চাও তাই করতে পারবে। সে করার ক্ষমতা তোমার ভেতরই আছে।’
সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি’ ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন বাঁধন। কেমন ছিল যাত্রাটা? জানতে চাইলে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘করোনার প্রথম দিকে সৃজিত মুখার্জি আমার সাথে যোগাযোগ করেছে। সে একটা ওয়েব সিরিজ বানাবে, আমাকে কাস্টিং করতে চায়। আমি এতটাই ট্রমার মধ্যে ছিলাম, ভাবছিলাম এসব ফেইক। সৃজিত আর কাউকে পায়নি খুঁজে, আমাকেই নক দিল? সৃজিত মুখার্জি কিন্তু বলেননি জয়া আহসান বা পরীমনিকে নিতে চান। যদি ওদের নাম কখনো চিন্তা করেও থাকে সেটাও কোনো ব্যাপার না। আমি মুসকান পড়েছি, আমি অবাক হয়েছি। মুসকান জুবেরীর চরিত্রে অভিনয় করে আমি সত্যি গ্রেটফুল।‘
মুসকান জুবেরীর চরিত্রের বিভিন্ন শেড ভালো লেগেছে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের। এজন্য লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনকে সাধুবাদ জানান তিনি।
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী-হক-বাঁধন ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন এবং সুনিপুণ অভিনয় দক্ষতার কারণে তার নাটক দেখে দর্শক মুগ্ধতা প্রকাশ করেছে এবং এখনো তার ভক্ত অনুরাগী সংখ্যা ব্যাপক। ব্যক্তিগত জীবনে তার একটি কন্যাসন্তান রয়েছে তবে স্বামীর সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে বেশ কিছু বছর আগে