সুমি আক্তারের প্রয়ানকালে তার বিয়ের বয়স ছিল মাত্র আড়াই মাস। এই আড়াই মাসের ভিতরে কি এমন ঘটেছিল যে স্ত্রীর নতুনত্ব না কাটতেই স্বামীর হাতে প্রাণ দিতে হলো তাকে। এই সকল প্রশ্নের জবাব দিলেন সুমির প্রাণনাশের সাথে সরাসরি ভাবে জড়িত থাকা প্রয়াত সুমির স্বামী। পারিবারিক কলোহের জের ধরেই স্বামীর হাতে প্রাণ দিতে হয়ে প্রয়াত সুমিকে।
প্রায় আড়াই মাস আগে মানিকগঞ্জের ঘিওর এলাকায় চাঞ্চল্যকর সুমি প্রাণনাশ রহস্য উদঘাটন করেছে সিআইডি। সিআইডি জানায়, সুমি আক্তার (২২) একই এলাকার মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রুপক (২৮)। বিয়ের সময় বলা হয়েছিল, বিয়ের পরও সুমি কাজ করবে। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের মতামত বদলে যায়। চাকরি ছেড়ে দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে সুমিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এর জের ধরে গত ২১ জুলাই সকালে চাকরি ছেড়ে দেওয়া নিয়ে স্বামী রূপকের সঙ্গে সুমির কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রূপক সুমিকে ঘুষি ও লাথি দেয় এবং ধারালো ছু// রি দিয়ে তার গলায় ছুরিকাঘাত করে। এতে সুমি আকতার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। প্রয়ান নিশ্চিত করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় রূপক। ঘটনার সাথে জড়িত মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপকের (২৮) সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির এলআইসি শাখার একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে রূপককে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
বুধবার বিকেলে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, দাম্পত্য কলহের জেরে বিয়ের মাত্র আড়াই মাসের মাথায় কনেকে প্রয়ানের ঘটনায় সারাদেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। প্রাণনাশকাণ্ডের বিষয়ে সুমি আক্তারের বাবা মো. এ ঘটনায় রহম আলী বাদী হয়ে রূপককে একমাত্র আসামি করে মানিকগঞ্জের ঘিওর থানায় একটি প্রাণনাশের মামলা করেন। ঘটনার পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সাথে রূপকের যোগসূত্র পাওয়া যায়। এলআইসির একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে রূপককে গ্রেপ্তার করে। তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে জানান, সুমি আক্তার পদত্যাগের বিষয়টি অফিসে জানিয়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত করার জন্য অফিস দক্ষ কর্মী খুঁজছে। তাই বিকল্প না পাওয়া পর্যন্ত চাকরি না ছাড়তে অনুরোধ করেন। চাকরি ছেড়ে দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে সুমিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি প্রায় ৯ বছর ধরে মানিকগঞ্জ জজ আদালতে সহকারী আইনজীবী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রায় আড়াই মাস আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে গত ১৫ মে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের আগেও নির্যাতিতা সুমি আক্তার বানিয়াজুরী ইউনিয়নে এসডিআই নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ের সময় বলা হয়েছিল, বিয়ের পরও কাজ করবেন সুমি আক্তার। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের মতামত বদলে যায়। তারা সুমি আক্তারকে চাকরি ছাড়ার জন্য চাপ দেয়। সুমি আক্তার জানান, চাকরি ছাড়ার বিষয়টি তিনি অফিসে জানান। অফিস তার বদল খুঁজছে। তার বিকল্প না পাওয়া পর্যন্ত চাকরি না ছাড়তে অনুরোধ করেন। তিনি আরও জানান, চাকরি ছেড়ে দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে সুমি আক্তারকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জুলাই ভিকটিমের পদত্যাগ নিয়ে আসামির বাসায় রূপক ও সুমি আক্তারের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে আসামি রূপক সুমি আক্তারকে ঘুষি ও লাথি মারলে রূপকের মা রওশন আরা বেগম রূপককে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রুপক আরও উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো ব্লেড দিয়ে সুমির গলা কেটে র// ক্তাক্ত জখম করে এবং সুমি আকতার কোলে লুটিয়ে পড়ে। সুমির প্রয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় রূপক।
উল্লেখ্য, চাঞ্চল্যকর সুমি প্রাণনাশের আসল ঘটনা উৎঘাটন করেছেন পুলিশের সিআইডি বিভাগ। সেদিন কি হয়েছিল, এবং কেনই বা তার সাথে এমন জঘন্য কাজ করলো তার স্বামী তার সবকিছু স্বীকারুক্তিমুলক জবান বন্ধী দিয়েছেন অভিযুক্ত স্বামী নিজেই। স্ত্রীকে চাকুরি ছাড়ার দিতেন, হয়তো এই কারনেই তার সাথে এরকমের ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি,প্রাথমিক ভাবে এটাই ধারনা করা হয়েছিল। তবে তিনি নানা কারনেই সুমিকে নির্জাতন করতে। আর এই নির্যাতনের এক পর্যায়েই তাক প্রাণনাশ করেন তিনি।