নেত্রকোনা শহরের কুড়পাড় ‘বিয়ে বাড়ি’ কমিউনিটি সেন্টারে সোমবার বিকেলে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। বিয়ের অনুষ্ঠানে হঠাৎ হাজির হন দুই নারী। তারা দুজনেই দাবি করেন যে, তারা নতুন বরের পুরানো বউ। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশও হাজির। এরপর বিয়ের অনুষ্ঠান পন্ড হয়। যাইহোক, তবে বরের দাবি, স্ত্রী দাবি করা নারীদের একজনের সঙ্গে বিয়ে হলেও তাকে দেওয়া হয়েছে তালাক। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। অপর জনকে বিয়ের কথা অস্বীকার করলেন নতুন বর।
পুলিশ ও স্ত্রী দাবি করা দুই নারী জানান, স্বামী সাজ্জাদ হোসেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। সে নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাখনা গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে। মঙ্গলবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়া চলাকালীন ঘটে বিপত্তি। বিয়ের আসরে হাজির হন দুই নারী।
স্ত্রী বলে দাবি করা নারীরা হলেন একই উপজেলার পিয়া জাহান ও নওরীন হাসান নিসা।
জানতে চাইলে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা ওই নারী বলেন, “গত বছরের ১ জুলাই সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আমার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। কয়েক মাস আগে সাজ্জাদ আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তার (সাজ্জাদের) আগেও একজন স্ত্রী রয়েছে। তার সঙ্গে মামলা চলমান রয়েছে। সোমবার জেলা শহরের কুড়পাড় ‘বিয়ে বাড়ি’ কমিউনিটি সেন্টারে তার আরেক বিয়ে চলছে। বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক আমি পুলিশ সুপার স্যারের কাছে বিয়ে বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ দেই। পরে পুলিশ গিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। আমি তার বিচার চাই।’
সাজ্জাদের প্রথম স্ত্রী বলেন, তিন বছর আগে তিনি আমাকে বিয়ে করেন। তারপর থেকে আমরা ময়মনসিংহে একসাথে ছিলাম। পরে বদলি হয়ে ধর্মপাশায় গেলে আমার সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে যায়। এক বছর আগে তিনি অন্য একজনকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। আমিও সেখানে উপস্থিত হয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিই। পরে শুনলাম, সে তার এক আত্মীয়কে বিয়ে করেছে। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলা চলছে। আজ (সোমবার) শুনলাম তিনি আরেকজনকে বিয়ে করছেন। পরে পুলিশের সহায়তায় আমরা বিয়ে বন্ধ করি।
জানতে চাইলে সাজ্জাদ হোসেন বিয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি আমার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছি। তার সাথে আমার মামলা চলছে। আমি আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবেলা করব।
তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করা মহিলাকে বিয়ে করার কথা অস্বীকার করেছেন।
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।