আ হ ম মুস্তফা কামাল গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী। এই সম্মানীয় পদে আসীন হবার পর থেকে তিনি অতি সততা ও নিষ্ঠার সহিত তার দায়িত্ব পালন করে যা্ছেন। এর পূর্বে তিনি পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন বিশ্বব্যাংক, জাইকার কাছেও ঋণ চাওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকে যাব, জাইকাতে যাব। সর্বদা সর্বত্র চেষ্টা করুন। ভালো সুদে ও ভালো শর্তে ঋণ পেলে নেব।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, দাতারা কোন শর্তে ঋণ দিতে চায় তা আমরা দেখব। তারা যদি ইতিবাচকভাবে এগিয়ে আসে এবং কম সুদের হার পায় তাহলে আমরা ঋণ নেব। এ সময় তিনি বলেন, শুধু আইএমএফ নয়, প্রয়োজনে সব উন্নয়ন সহযোগীর কাছে ঋণ চাওয়া হবে।
গত সপ্তাহে, অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন যে আপাতত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের প্রয়োজন নেই।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রতি বছরই আইএমএফের প্রতিনিধি দল আসে। তারা প্রতি বছর পরামর্শ করে। সে সময় আমরা যদি বলি টাকা দরকার, তাহলে তারা টাকা দিলেও সুদের হার বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। ভোক্তা হিসাবে, আমরা খুব চিন্তাশীল সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করি। আমরা ভান করি আমাদের টাকার দরকার নেই। দেশের স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। ‘
আইএমএফকে দেওয়া চিঠিতে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো পরিমাণ উল্লেখ করিনি। এখন বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে ক্রেডিট প্রয়োজন। এজন্য আইএমএফের কাছে ঋণের আবেদন করা হয়েছে। আর শুধু আইএমএফ নয়; বিশ্বব্যাংক, জাইকা, এডিবিসহ সব দাতা ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ সহায়তা চাওয়া হবে। আমি যেখান থেকে ভালো সুদে ও ভালো শর্তে লোন নেব।
তবে আইএমএফের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন রয়টার্সকে বলেছেন যে বাংলাদেশ ক্রেডিটার্স রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ট্রাস্ট থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য আলোচনার অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশ ৪১৬ মিলিয়ন ডলার সাহায্য চেয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতি উন্নয়ন সহযোগীদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা ঋণ দিতে আমাদের পেছনে আছে। কারণ তারা জানে বাংলাদেশ ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ভালো দেশ। বাংলাদেশ সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। আর কয়েকদিন, তার পর আর ঋণ নিতে হবে না। আমরা বলেছিলাম ঋণ দেব। আমি আবার বলছি, আমরা ধার দিতে পারি। ‘
ডলার সংকট মোকাবেলায় অনেক উদ্যোগ নিয়েও কেন কাজ হচ্ছে না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, কাজ হবে, একটু সময় লাগবে। ‘
অর্থমন্ত্রী বলেন, “কিছু আমদানিকারক দাম বাড়ায় হেরফের করে আমদানি করছে। আমি এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখছি, তবে চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে ডলারের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। আইএমএফের সঙ্গে সুদের হার বাড়ানোর কথা বলা প্রসঙ্গে। ব্যাংকিং খাত ৬-৯% বৃদ্ধি পেয়ে তিনি বলেছিলেন যে দেশের অর্থনীতি এখন ভাল অবস্থানে রয়েছে। যদি সুদের হার ৬-৯ % স্থির না করা হত তবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগে সংকটের সময় ছোট, বড়, মাঝারি কোনও ব্যবসাই টিকে থাকতে পারত না। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি ব্যাংক খাতে আমানত ও সুদের হার ৬-৯-এ উন্নীত করার উদ্যোগ ভালো। সুদের হার ৬-৯ -এ কমানোর কারণে ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। বেসরকারি খাতও শক্তিশালী হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বে ব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা রয়েছে যাদের কাছ থেকে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ ঋণ নিয়ে থাকে। উন্নয়নশীল দেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশও তাদের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ঋণ নিয়ে থাকে। তবে সেই ঋণ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়।