বিদেশ থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের জন্য সরকার বিশেষ স্কিম নিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় দুই লাখ প্রবাসীকে এককালীন ১৩ হাজার ৫০০ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। তাদের উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও ঋণ পেতেও সহায়তা করা হবে। প্রকল্পটির নাম ‘রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অফ ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট বা রেস’।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড এ উদ্যোগ নিয়েছে। প্রকল্পে সহায়তা করছে বিশ্বব্যাংক।
মঙ্গলবার রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন এবং ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনা মহামারীর সময়ে প্রায় ৫ লাখ প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছেন। সরকার এই শ্রমিকদের পুনর্বাসন এবং তাদের আরও দক্ষ করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এসব শ্রমিকদের ঘুরে দাড়াঁনো এবং অর্জিত দক্ষতা কাজে লাগাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের অর্থের পরিমাণ ২৭০ কোটি টাকা। ২ লাখ বিদেশি শ্রমিক পাবেন ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, প্রকল্পের সহায়তা নিতে সারাদেশে ৩০টি কেন্দ্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করা যাবে। তবে এরই মধ্যে নিবন্ধন করেছেন ৫৯ হাজার ১৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৫ হাজার ৫০০ এবং নারী ২ হাজার ৬৯৫ জন।
ড.আহমেদ মনিরুছ সালেহীন বলেন, ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের পুনর্বাসনে এ প্রকল্পের আওতায় প্রবাসীদের জন্য একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে তাদের এককালীন অর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রথমে সিদ্ধান্ত ছিল করোনা কালীন সময়ে ফিরে আসা প্রবাসীদের নিয়ে এই প্রকল্প। কিন্তু পরে আমরা তা সার্বজনীন করেছি।
প্রাথমিকভাবে দুই লাখ এখন সরাসরি এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হবে। তাদের ব্যবসায়িক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পুঁজির ব্যবস্থা করা হবে। ব্যাংক সংযুক্ত করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীদের সহায়তায় সরকার সোচ্চার রয়েছে। গত ৬ মাসে ৫৯ রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, নতুন এ প্রকল্প এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, সিলেট এবং সুনামগঞ্জ।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ১৭৮টি দেশে ১৩ মিলিয়নেরও বেশি প্রবাসী কর্মরত আছেন। তাদের রক্ত-ঘাম দিয়ে অর্জিত রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। এসব শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তারা বলেছেন যে নতুন প্রকল্পের অধীনে গৃহীত সমস্ত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নগদ প্রণোদনা, স্ব-কর্মসংস্থান সহায়তা, ঋণ সহায়তা, মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শ, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ সহায়তা, দক্ষতা শংসাপত্র, প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক কাজ।