আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসির ফুটবল দুনিয়ার বাইরেও তার একটি পরিবার রয়েছে যেটা নিয়ে অনেক সময় কেউ ভাবেননি। মেসির স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর সাথে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমেই তারা সারা জীবনের জন্য এক হন। তাদের প্রেমের কাহিনি কিন্তু লায়লি-মজনুর থেকে কোনো অংশে কম যায় না। ছোটবেলা হতেই তারা দুজন একসঙ্গে বড় হয়েছেন। একে অপরের ভালো লাগা মন্দ লাগা এবং কষ্টের সময় ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। তারা যখন একে অপরের ছোটো বেলার খেলার সাথি ছিলেন সেই সময় থেকে তারা একে অপরের সাথে সম্পর্কে জড়ান।
জীবনের হাজারো চড়াই-উতরাই পেরিয়ে একে অপরের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন।
বিশ্বকাপ জয়ের পর আবেগঘন স্ট্যাটাস দিলেন মেসির স্ত্রী। মেসির স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্তোনেলা লিখেছেন, ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন! আমি জানি না কিভাবে শুরু করব, লিওনেল মেসি, তোমাকে নিয়ে আমি ভীষন ভীষন গর্বিত। হাল না ছাড়ার শিক্ষা যেটা তুমি আমাদের শিখিয়েছ, যার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। তুমি আমাদের শেষ সময় পর্যন্ত লড়াই করতে শিখিয়েছ। শেষ পর্যন্ত তোমার অধরা কাজ সম্পন্ন হলো। তুমি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলে। আমরা জানি, তুমি অনেক বছর ধরে যন্ত্র”ণায় দ”গ্ধ হয়েছো। তুমি এই সাফল্য অর্জন করতে চাইছিলে। তুমি সেটা করতে পারলে। এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা।’
ছোটবেলা থেকে মনের কোণে যে ভালোবাসা জন্মেছিল, তা বয়স বাড়তেই তা ডালপালা মেলে মহীরুহ হয়ে ওঠে। আর এখন মেসির জীবনের ভালো-মন্দ সব কিছুর যোগ্য সঙ্গী আন্তোনেলাই।
২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জন্য তিনি যেমন মেসির পক্ষে তার কষ্ট ও হতাশা ভাগ করে নিয়েছিলেন, তেমনই ২০২২ সালে ৩৬ বছরের খরার পর তিনি আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের সাথে আবেগে ভেসে গিয়েছেন।
রোববার টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেসির সঙ্গে তিন সন্তান নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভেসে যান আন্তোনেল্লা। এই সাফল্য শুধু মেসি বা তার সতীর্থদের নয়, এই আনন্দ আন্তোনেল্লার পাশাপাশি বিশ্বের কোটি কোটি আর্জেন্টাইন ভক্তের।
আর স্বামীর সাফল্যে আবেগাপ্লুত আন্তোনেলা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি হৃদয়গ্রাহী বার্তা লিখেছেন। মেসি সহজে হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো নন, এবং তার জীবনসঙ্গী এই মনোভাব নিশ্চিত করেছেন। পারিবারিক ছবি পোস্ট করে আর্জেন্টিনা দলকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার রাতে বিশ্বকাপ ফাইনাল শেষ হওয়ার পর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মাঠে আনন্দ প্রকাশ করেন লিওনেল মেসি। এ সময় তার স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোরও চোখে পানি এসে পড়ে। সে সেই সময় তার আবেগ ধরে রাখতে পারেনি।
আসলে সব ট্রফি পেলেও এত দিন বিশ্বকাপ না পাওয়ার কষ্টে উদ্দোলিত ছিল মেসি। তবে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার তার শেষ বিশ্বকাপ জিতে সব আক্ষেপ মিটিয়েছেন।
ফ্রান্সের সাথে খেলতে নেমে মেসি ফ্রান্সের জালে ২ টি বল প্রবেশ করান। টাইব্রেকারেও প্রথম গোলটি করেন। কাতার বিশ্বকাপে তিনি সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে নেন গোল্ডেন বল। ৩৬ বছর পর তিনি দেশকে বিশ্বকাপ শিরোপা দিতে পেরে অনেক খুশি এবং উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। এদিকে মেসি ও তার দলের খেলোয়াড়দের জন্য সংবর্ধনা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আর্জেন্টিনা।