টানা পাঁচ ম্যাচ হেরে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে প্রথম দল হিসেবে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। যদিও তারা আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় দিয়ে তাদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল, লাল-সবুজরা তাদের শেষ ম্যাচে তুলনামূলকভাবে দুর্বল নেদারল্যান্ডসের কাছে শোচনীয় পরাজয়ও দেখিয়েছিল।
তবে টাইগারদের পরাজয় ছাপিয়ে আলোচনায় ব্যাটিং অর্ডারে অদলবদল। কারণ বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই তা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা গেছে। এরই মধ্যে বিষয়টি আলাদা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ ছাড়া প্রধান কোচ হাথুরুর সিং-এর মন্তব্যের সুর মেলে না অধিনায়ক সাকিবের সঙ্গে।
টাইগারদের কোচ বা ক্রিকেটার, যেই সংবাদ সম্মেলনে আসুক; একটি খুব পরিচিত প্রশ্ন হল কটি প্রশ্ন যেন খুব পরিচিত ‘ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন’। এ প্রশ্নের জবাবে টপ-অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছিলেন, এ প্রশ্নের উত্তর জানেন না তিনি। কোচ-অধিনায়ক বলতে পারবেন। তবে দলের প্রয়োজনে যেকোনো অর্ডারে ব্যাট করতে সমস্যা নেই।
এরপর সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কোচ হাথুরু জানান, খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলে ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করা হচ্ছে। তারা বিষয়টি ও ভূমিকা সম্পর্কে অবগত। তাদের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে সমস্যা নেই মানে বিষয়টি ঠিক আছে।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সেখানেও তাকে একই প্রশ্ন করা হয়। জবাবে অলরাউন্ডার বলেন, মিরাজ খুব ভালো ব্যাটিং করছিল। সেজন্য তাকে ওপরে খেলানো। তার থেকে সেরাটা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা।
এ সময় সাকিবও প্রশ্ন তোলেন। তার প্রশ্ন, প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানরা একটা নির্দিষ্ট ক্রমে ব্যাট করলে কি সব ঠিক হয়ে যেত? রান হতো?
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে মন্তব্য করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান, ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে কথা বলার সঠিক সময় নয়। দল তাকে একটি দায়িত্ব দিয়েছে। সেই চেষ্টাই করছেন তিনি।
বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হারের পর আবারও একই প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন সাকিব। এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, রিয়াদ ছয়ে সেঞ্চুরি করলেও কেন তাকে আট নম্বরে নামানো হলো? জবাবে সাকিব বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। অনেক সময় আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না বোলিং করতে, বিভিন্ন পজিশনে ব্যাটিং করতে, বিভিন্ন বোলারকে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। আমাদের এগুলো এডজাস্ট করতে হয়। এজন্য ব্যাটিং অর্ডারে শাফল করা।
অন্যদিকে, বিশ্বকাপের আগে দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সাকিবের বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারটি মনে আছে নিশ্চয়ই; সেখানে সাকিব বলেছিলেন, দলের প্রয়োজনে যে কাউকে যেকোনো পজিশনে ব্যাটিং করতে হবে।
তবে এবার কি সাকিব ভুল করেছেন এবং সত্যটা বলেই বসলেন যে, ভিন্ন ভিন্ন পজিশনে ব্যাটাররা ব্যাটিং করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।
এটা হতে পারে যে; দেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালও স্পষ্টতই তার ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তনকে হালকাভাবে নেননি। কারণ, তাকেও আফগানদের বিপক্ষে চার-পাঁচে ব্যাট করার প্রস্তাব দিয়েছিল বোর্ড। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর করেননি তামিম। আর সে কারণে বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি (তামিম)। এরপর তামিমও বিষয়টিকে ‘নোংরা’ বলে মন্তব্য করেন।