দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পাঁচজন বিশেষজ্ঞ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা ছয় থেকে আট সপ্তাহ বাংলাদেশে অবস্থান করবেন এবং নির্বাচন সংক্রান্ত সহিংসতার মূল্যায়ন করবেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে পাঁচজন বিশেষজ্ঞ পাঠানোর কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের দুই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) গত সোমবার (নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
ইসি, এনডিআই ও আইআরআইকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশে চারজন বিশেষজ্ঞ ও একজন বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ক পাঠানো হবে। তারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ কাজ করবেন। নির্বাচনের সপ্তাহ দুয়েক আগে তারা বাংলাদেশে আসবেন।
এই বিশেষজ্ঞরা নির্বাচন সংক্রান্ত সহিংসতার ঘটনাগুলি মূল্যায়ন করবেন। বিশেষ করে, তারা রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সহিংসতা, একটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে আন্তঃদলীয় দ্বন্দ্বের কারণে সহিংসতা, নারী ও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, অনলাইন হয়রানি এবং হুমকির মতো বিষয়গুলি দেখবে। এসব পরিস্থিতিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাও মূল্যায়ন করবে তারা।
চিঠিতে যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছেন এনডিআই-এর এশিয়া প্যাসিফিক প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেমি স্পাইকারম্যান এবং আইআরআই-এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক স্টিফেন চিমার। এতে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ মিশনের কাজ হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য কারা দায়ী এবং এর প্রভাব মূল্যায়ন করা। মিশন ভবিষ্যত নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা কমাতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে। এনডিআই এবং আইআরআই-এর বিশেষজ্ঞরা তাদের মূল্যায়ন সর্বজনীন করবেন এবং ইসিকে একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশসহ নির্বাচন-পূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গত অক্টোবরে এনডিআই ও আইআরআই-এর একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসে। মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিদেশি কূটনীতিকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন তারা। ওয়াশিংটনে ফিরে, প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে পাঁচ দফা সুপারিশ করেছিল এবং বাস্তবসম্মত, দীর্ঘস্থায়ী এবং বিশ্বাসযোগ্য পরিবর্তন অর্জনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে খোলামেলা সংলাপে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু সেই আলোচনা আর হয়নি।