জুলাই মাসের গণহত্যা সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার জন্য বরখাস্তকৃত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মির বিরুদ্ধে মানহানীর মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ঢাকার সিএমএম আদালতে গণঅধিকার পরিষদের প্রচার সম্পাদক আবু হানিফ এই মামলাটি করেন। আদালত অভিযোগের ওপর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশের জন্য বিষয়টি রিজার্ভ করেন।
এদিকে, ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে তাপসীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সোমবার (৭ অক্টোবর) তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ৬ অক্টোবর তার ফেসবুক পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা প্রয়োজন। বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাওয়ার অধিকারী হবেন।
তাপসী তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, “সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।”
এছাড়া, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। তার পোস্টগুলোর মধ্যে একটি ছিল যেখানে তিনি ছাত্র আন্দোলনের নিহত শহীদ আবু সাইদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছেন। এসব মন্তব্যের জন্য তিনি ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন, যা সরকারের দৃষ্টিতে গুরুতর শৃঙ্খলাবহির্ভূত আচরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তাপসীর বিরুদ্ধে এই সব কর্মকাণ্ড ও মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উত্তেজনা তৈরি করেছে এবং জনগণের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এখন দেখার বিষয় হবে এই মামলার ফলাফল এবং তাপসীর ভবিষ্যৎ কেমন হয়।