দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিরোধী দল কারা হচ্ছেন তা বড় প্রশ্ন। কারণ এবার আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতার পর সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। এ সংখ্যা মাত্র ১১। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারা স্বতন্ত্র হিসেবে পেয়েছেন ৬২ ভোট।
12তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে 299টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৬৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। 223 জন জিতেছে। দলীয় মনোনয়নের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ২৬৯ জন। তাদের মধ্যে 62 জিতেছে।
ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টির ১১টি আসনের বিপরীতে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬ গুণ আসনে জয়ী হয়েছেন। সেক্ষেত্রে দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দল থাকবে নাকি বিরোধী জোট হবে? রাজনীতির মাঠে এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেই আলোচনা, বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির (জাপা) আসন সংখ্যা কম হওয়ায় এবার জাতীয় সংসদে বিরোধী জোট হতে পারে।
বৃহস্পতিবার জাপা নিজেকে বিরোধী দল ঘোষণা করেছে। দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবেও ঘোষণা করছে দলটি।
এদিকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা তৃণমূলের অনেকেই মনে করেন, বিরোধী দলের পরিবর্তে ‘বিরোধী জোট’ থাকা জরুরি। এতে জাতীয় সংসদ হবে প্রাণবন্ত ও সক্রিয়।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-৪ আসনে বিজয়ী হন মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী। তার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদে বিরোধী জোট গঠন হতে যাচ্ছে বলে আলোচনা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে রাজধানীর একটি অভিজাত এলাকায় একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন স্বতন্ত্র বিজয়ীরা। তবে এই বৈঠকে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
এ নিয়ে দলে মতভেদ রয়েছে। অনেকেই দলের বিরুদ্ধে জোট করতে রাজি নন।
তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী কেউ কেউ জোট চান।
বিরোধী জোট হিসেবে আলোচনা ও নানা প্রচেষ্টা চালানো কয়েকজন থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হওয়া অনেকেই এ বিষয়ে অবগত নন।
ঢাকা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন মশিউর রহমান মোল্লা সজল। জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, তারা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন।
প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ সদস্য হওয়া সজল বলেন, আমি কোনো বৈঠকে ছিলাম না। আমাকে জানানো হয়নি। তবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জাতীয় পরিষদকে প্রাণবন্ত করার জন্য একটি সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। আমি মনে করি একটি বার্তা হবে. আমরা সেই বার্তার জন্য অপেক্ষা করছি।
দলটির নেতারা এখনো এ বিষয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করতে রাজি নন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তারা এ বিষয়ে কথা বলতেও রাজি নয়। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য বা জবাব দিচ্ছেন না।
৮ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বিরোধী দলকে রং নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সম্মুখীন হন।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির অনেকেই জিতেছে, যেমন চৌদ্দ দলের মধ্যে দুটিও জিতেছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বেশি দূরে নয়। কে হবেন হাউস লিডার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী, নতুন নেতা ঘরের পরিস্থিতি, বাস্তবতা, কী করবেন… সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে প্রশ্ন করা হয়, সংসদে বিরোধী দলের আয়তন কত? ১১ জন নাকি ৬২ জন?
তবে এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি ওবায়দুল কাদের।