আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপিসহ আরও কয়েকটি সমমনা দল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কে হবে বিরোধী দল জানতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
বিকেল ৪টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের মনোভাব কী ছিল? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের বক্তব্য তারা শুনেছেন। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এবারের নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি এসেছে। 27টি দল অংশগ্রহণ করে, 1896টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তারা এই বিষয়গুলোকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। তারা একটা কথা জানতে চায়, বিরোধী দল কারা হবে? তারা আসলে কথা বলার চেয়ে আমাদের কথা শুনতে বেশি আগ্রহী ছিল। তারা সেভাবে মন্তব্য করতে চায়নি। আমরা আমাদের বক্তব্য রেখেছি। নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি, বিএনপি এল কি না- এটা অনেক আগের ব্যাপার। খুব একটা আলোচনা নয়, তারাও জানে।’
বিরোধী দল কারা হবে, সে বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আওয়ামী লীগ কী বলেছে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের ফলাফলই বলে দেবে কে বিরোধী দল হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা একটা কথা বলেছি যে নির্বাচনের টার্ন আউট সন্তোষজনক হবে। মানুষ এই নির্বাচনে আগ্রহী। সারা বাংলাদেশে ভোটারদের মধ্যে যে স্বতঃস্ফূর্ততা পরিলক্ষিত হয়েছে, তাতে ভোটারদের নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটা সংবিধানসম্মত। প্রতি পাঁচ বছর পর নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি সহিংসতার কথা বলছে, সহিংসতা করছে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সহিংসতা করতে চায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের নির্বাচনের চেয়ে ইউক্রেন, গাজা, ইসরাইল ও ফিলিস্তিন নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন দাবি করে কাদের বলেন, ইউক্রেন নিয়ে তাদের এখন মাথাব্যথা, কিন্তু মাথাব্যথা গাজা, ইসরাইল ও ফিলিস্তিন নিয়ে। এই বিষয়গুলো বিশ্ব রাজনীতিতে স্পষ্ট। তারা এটা নিয়ে বেশি চিন্তিত।
তিনি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগের লোকজনই কি স্বাধীন? সেটা জানতে চাইল। আমরা বলেছি এটা সত্য নয়। বহিরাগতরাও স্বতন্ত্র নির্বাচন করছে। অনেকেই বিএনপি থেকে এসেছেন এবং স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। অধিকাংশ আওয়ামী লীগ কিন্তু সব স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ নয়।
আওয়ামী লীগ নেতারা দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা খোলা আছে। সেই অধিকার তাদের দেওয়া হয়েছে। তাকে নিয়ে স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ কাজ করলে দোষের কিছু আছে তা বলা হয়নি।
এমপি, জেলা সভাপতিসহ বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের ১৭ নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কাউকে বহিষ্কারের ক্ষমতা জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে কাউকে দেওয়া হয়নি। তারা কেন্দ্রে সুপারিশ করতে পারেন।
টিআইবি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘টিআইবি বিএনপির একটি শাখা সংগঠন, আদর্শের। টিআইবি যা বলে বিএনপি বলে, টিআইবি যা বলে বিএনপি বলে। আমি টিআইবি ইন্টারন্যাশনালের কথা বলছি না। আমি বাংলাদেশের কথা বলেছি।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, তথ্য সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, উপ-প্রচার সম্পাদক আবদুল আউয়াল শামীম, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান ও কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত উপস্থিত ছিলেন। ইইউ প্রতিনিধি দলে ছিলেন ডেভিড নোয়েল ওয়ার্ড এবং রেবেকা কক্স।