বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। জাতিসংঘ তাদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে চারটি আহ্বান জানিয়েছেন।
আহ্বানগুলো হচ্ছে-
১. অবিলম্বে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ অভিযোগ ছাড়াই আটক নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক কর্মীদের মুক্তি দিন। ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী বিচার করতে হবে।
২. বিচার বিভাগের সততা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, বিনামূল্যে এবং বাধাবিহীন অনুশীলনের নিশ্চয়তা দেওয়ার অনুরোধ। বিশেষ করে রাজনৈতিক সমাবেশে অপ্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ আরোপ করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে এই মৌলিক স্বাধীনতার গুরুতর লঙ্ঘন হলে কেন তা করা হয়েছে তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সমালোচনামূলক প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে হু/মকি, শারীরিক ও অনলাইন স/হিংসতা বা বিচারিক হ/য়রানি এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা মানবাধিকার এবং আইনের শাসনকে শক্তিশালী করার জন্য অন্যান্য পদক্ষেপের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন ও পরামর্শ দিতে প্রস্তুত, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও অন্যান্য কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থাহীনতা প্রকাশ করে নির্বাচন বর্জন করেছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়েছি, কথিত অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে দ্রুত এবং স্বাধীন তদন্ত করার জন্য তাদের আহ্বান জানিয়েছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের বিপজ্জনক অবক্ষয় ঘটেছে। এছাড়াও, আমরা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা হারানোর বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এটি দেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট করছে, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
আমরা সরকারকে মানবাধিকার সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে, মৌলিক স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণের অবাধ ও নিরাপদ অনুশীলনের জন্য একটি সক্ষম পরিবেশ তৈরি করতে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানাই।