আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে আসেন, দেখি কার কত দম; জনগণ কাকে চায় তা আমরা যাচাই করি।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি তাদের নির্বাচনে আসার আহ্বান জানাই। নির্বাচনে আসেন, দেখি কার কত দম; জনগণ কাকে চায় তা আমরা যাচাই করি।
আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এখনো নির্বাচন নিয়ে দ্বিধায় আছেন, তাদের বলবো নির্বাচনে আসুন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
যেসব দল ইতোমধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে তাদেরকে তিনি অভিনন্দন জানান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি বলতে পারি আওয়ামী লীগের আমলের প্রতিটি নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। এবার আমি বারবার নির্দেশনা দিয়েছি জনগণের ভোটের অধিকার…‘আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব’ জনগণের সে অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করব না। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করুক।
শেখ হাসিনা বলেন, পর্যবেক্ষক আসতে চাইলে আমরা নিজেরাই ডেকেছি, এখানে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই। কারণ আমাদের জনগণের ভোট চুরি করতে হবে না, জনগণের আমাদের ওপর আস্থা আছে।
বিএনপির প্রতি জনগণের আস্থা নেই বলে বিএনপি নির্বাচনে আসবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আসলে নির্বাচনে আসার মতো তাদের আস্থা বিশ্বাস নাই।
রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি বলেই বাংলাদেশ এগিয়েছে এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। একে ধ্বংস করার জন্য তাদের বিভিন্ন প্রক্রিয়া। এখন তারা রাজনৈতিকভাবে পারেনি, এখন তারা কীভাবে অর্থনৈতিকভাবে চাপ দেওয়া যায় তা বের করার চেষ্টা করছে।
দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, পৃথিবীর কিছু মোড়ল আছে, যেখানে তাদের সমর্থন সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন না, আরেক জায়গায় যদি হয় সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। এরকম দু-মুখো—বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাটাকে নস্যাৎ করার চক্রান্ত।
শেখ হাসিনা নৌকায় ভোট দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তিনি আস্থার সঙ্গে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আপনি যাকে চান তাকে ভোট দিন, এতে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে আমি আপনাদের কাছে নৌকা ব্র্যান্ডকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানাব। তবে সমগ্র জনগণের ইচ্ছা, ভোটারদের ইচ্ছা; তারা যাকে খুশি দিতে পারেন।
তিনি বলেন, আমার ভোট আমি দেব, যাকে চাই তাকে দেব, এটাই আমাদের স্লোগান। তারপরও আমি নৌকায় ভোট চেয়ে রাখলাম, কারণ এটা আমাকে চাইতেই হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নৌকা ব্র্যান্ড সরকারে এলে এদেশের মানুষ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুত গেছে, রাস্তাঘাট, ব্রিজ ও সেতু নির্মিত হয়েছে এবং মানুষকে আধুনিক ও উন্নত জীবন দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেকটা আমরা সাফল্য অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, তাই নৌকা ব্র্যান্ড থাকলে মানুষের জীবনে শান্তি আসে, সমৃদ্ধি আসে, জীবন উন্নতি হয়, এটাই বাস্তবতা। নিশ্চয়ই দেশবাসী সেই বাস্তবতা মাথায় রেখে নৌকার ব্র্যান্ডকে ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীকে তাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন।
বিএনপি আমলে নির্বাচনের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি যতবারই নির্বাচন করেছে, ভোটের অধিকার নিয়ে খেলা করেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। যে ক্ষমতা এক সময় সেনানিবাসে সীমাবদ্ধ ছিল তা এখন জনগণের হাতে।
২০১৪ সালে আস্থা না থাকায় তারা নির্বাচনে আসেননি জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের অপবাদ দিলেও এখন পর্যন্ত কেউই অনিয়মের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
এতে সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অধিবেশনের প্রথম দিনে কয়েকটি বিভাগের সংসদীয় আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়।
৩০০ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৈঠক করবে দলটি।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে ৩০০ আসনের বিপরীতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৩ হাজার ৩৬২ জন। প্রতি আসনে গড়ে ১১ জন এই ফরম কিনেছেন।