গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আবারও আলোচনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি, স্থানীয় সময়) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ব্রিফিংয়ে আবারও নির্বাচনসহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।
ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের কাছে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কানাডার একটি তদন্তে রাশিয়া ও চীনের পাশাপশি দেশটির নির্বাচনে ভারতের সম্পৃক্ততা উঠে এসেছে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের সঙ্গেও ভারতের সম্পৃক্ততা দেখা গেছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীও প্রকাশ্যে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের একতরফা নির্বাচনের মতো তাদের বিজয়ের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। সমালোচকদের দাবি, ভারতীয় প্রভাবের কারণে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
জবাবে মিলার বলেছিলেন, “কানাডিয়ান তদন্ত সম্পর্কে আপনি যে রেফারেন্স দিয়েছেন, আমার কাছে এর কোনও উত্তর নেই।” এর উত্তর দিতে পারে কানাডা। বাংলাদেশ এবং গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি বলব- যেমনটি আমরা বাংলাদেশ এবং অন্যান্যদের সম্পর্কে বহুবার বলেছি, শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তায় অগ্রগতি। এটি মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রবিন্দু। গণতান্ত্রিক নীতিকে এগিয়ে নিতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। বাংলাদেশের সকল মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে আরও জানতে চান- জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য আটক বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে। ৭ জানুয়ারির প্রহসনমূলক নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা, বিএনপি নেতাসহ ২৫ হাজার বিরোধী কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র কি নির্বাচনের আগে ঘোষিত ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতির পরিপ্রেক্ষিতে স্বৈরাচারী শাসনের গণতন্ত্রের প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে?
জবাবে মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমাদের মূল্যায়ন আপনি আগেও শুনেছেন। এই নির্বাচনকে আমরা কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু মনে করি না। নির্বাচনের সময় বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের বিষয়েও আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।
তিনি বলেন, ‘আমি দুটি বিষয়ে কথা বলব। প্রথমত, আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই যে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে। দ্বিতীয়ত, আমি সরকারকে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবং বিরোধী দলের সদস্য, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানাই। এসব বিষয় নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে।