নিঃস্বন্দেহে অন্যান্য ভালো কাজের মধ্যে ‘বিয়ে’ একটি। তবে কখনো কখনো এই বিয়ের দিনেই ঘটে থাকে নানা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। আর সেই ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে এবার ঠিক এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়ি বারোঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এ ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বিয়েতে হিন্দু রীতি মেনে সাতপাক ঘোরা হয়ে গেছে। বিয়ে বাড়িতে সবাই আনন্দ করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এর মধ্যে বর-কনের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে পাত্র ও পাত্রীপক্ষের লোকদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়।
‘মা’র’ধ”রে’র জেরে কনের মামা অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশেষে বিয়ে ভেঙে দিলেন কনে। নতুন বউ ছাড়াই বাড়ি ফিরলেন স্বামী।
স্থানীয়রা জানায়, মধ্য বড়গাড়ী এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে ফুলবাড়ী এলাকার এক যুবকের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে ঠিক হয়। দুই পক্ষের মধ্যে সাত মাস ধরে আলোচনা চলে। সোমবার ছিল তাদের বিয়ে। সেদিন রাতে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানও হয়েছিল। কিন্তু বাসি বিয়ের নিয়মের কারণে বর-কনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়।
কনে পক্ষের অভিযোগ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দলের লোকজন এসে ‘মা’র’ধ’র করে। এতে কনের মামা গুরুতর আহত হন। এখানেই শেষ নয়।
বরপক্ষ জোর করে কনেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বরকে রাজি বিয়ে করেননি কনে। শেষে পাত্র একাই বাড়ি ফিরলেন।
কনে পক্ষ অভিযোগ করেন, বরপক্ষের লোকজন তাদের লাঞ্ছিত করেছে। উভয় পক্ষের ঝামেলার মধ্যে কনেকে কাঁধে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কনে বাধা দিলে তাদের দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়।
অবস্থা এমন যে, আমন্ত্রিত লোকজনের বাইরেও ভিড় জমান বহু মানুষ। এরপরই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন কনে। সাফ জানিয়ে দেন, এই পরিবারে বিয়ে করবেন না তিনি। মেয়েটির কথায় তার বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজন রাজি হন।
নববধূ বলেন, তারা ‘ম’দ’ খেয়ে’ আমার আত্মীয়দের ‘মা’র”ধ”র করেছে। বিয়ের দিন যারা এমন কাজ করতে পারে, তারা বিয়ের পর কী করবে!
মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় বাবা-মায়ের কোনো আফসোস নেই। তাদের মতে, মেয়েটি বিয়ে না করেই ভালো করেছে।
অন্যদিকে, পাত্র বলেন, বলা হয়েছিল দুই রাতে দুটি বিয়ে হবে। কিন্তু তারা একই রাতে বাসি বিয়ে দিচ্ছিল। তখন বাধা দেওয়ায় তাদের কয়েকজন পেছন থেকে লাফ দেয়।
ঘটনাটি জানাজানি হতেই ঘটনাস্থলে যায় ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। পাত্রসহ ৪ জনকে আটক করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে এলাকাবাসী। এরপর পঞ্চায়েত প্রধানের উপস্থিতিতে সালিশি বৈঠক হয়। শেষ পর্যন্ত এলাকার লোকজন পাত্রকে ছেড়ে দেয়।
এদিকে অনেক ধারদেনা করে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছিলেন পাত্রীর বাবা। কিন্তু এতকিছুর পরও মেয়েকে বিয়ে দিতে না পারায় বেশ চিন্তায় পরে গেছেন তিনি।