ময়মনসিংহের নান্দাইলে কলেজছাত্র মুরাদ হাসান (১৭) হত্যা মামলার মূল আসামি এবং ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আলম হামিমকে বিদেশে পালানোর চেষ্টাকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারে স্বস্তি ফিরেছে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার দুপুরে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওসি বলেন, “হত্যা মামলার আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত ছিল। গোপন সূত্রে জানতে পারি, মূল আসামি হামিম বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পরে শুক্রবার রাতে কাতারে যাওয়ার আগ মুহূর্তে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তাকে নান্দাইল থানায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। বিস্তারিত পরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জানানো হবে।”
গ্রেপ্তার হওয়া আশরাফুল আলম হামিম উপজেলার আলাবক্সপুর গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে এবং নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজ শাখার ছাত্রলীগ নেতা। নিহত মুরাদ হাসান নান্দাইল পৌরসভার কাকচর মহল্লার বাসিন্দা মো. তফাজ্জল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র ও মামলার এজাহার অনুযায়ী, নান্দাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর হয়ে লিফলেট বিতরণ করছিলেন মুরাদসহ কয়েকজন। এ সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থনে থাকা ছাত্রলীগ নেতারা তাদের বাধা দেন এবং ধাওয়া করেন।
ধাওয়ার একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতারা চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের পাশে মুরাদকে ধরে ফেলে। তাকে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করা হয়। অন্যরা পালাতে সক্ষম হলেও মুরাদ মাটিতে পড়ে গেলে আশরাফুল আলম হামিম তার বুকের ওপর উঠে ছুরিকাঘাত করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর মুরাদ মারা যান।
মুরাদের পরিবার এ ঘটনায় ১১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার পর থেকেই প্রধান আসামি হামিম পলাতক ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এই গ্রেপ্তার হত্যাকাণ্ডের বিচারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।