Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / National / বিমানের মতো এবার ট্রেনে সেবা দিচ্ছে ‘ট্রেনবালা’

বিমানের মতো এবার ট্রেনে সেবা দিচ্ছে ‘ট্রেনবালা’

১ ডিসেম্বর থেকে চালু হওয়া ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ১১ জন তরুণী সেবা দিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই তারা সাধারণ যাত্রীদের কাছে ‘ট্রেনবালা’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। তারা যাত্রী-বান্ধব অভিজ্ঞতার সাথে ভদ্র এবং ভদ্র হওয়ার ক্ষেত্রেও এগিয়ে। এক কথায় বিমানের মতো ট্রেনেও এখন ট্রেনবলারের মতো পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে।

খোদ রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ট্রেনম্যানরা দিনরাত যাত্রীদের সেবা দিচ্ছেন অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে। টিকিট ছাড়া যাত্রী তোলা বা অন্য কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত না থাকায় রেল কর্তৃপক্ষও যাত্রীদের সেবায় বেশ খুশি।

রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন যুগান্তরকে বলেন, আমরা রেল যাত্রীদের শতভাগ সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। নারী ও শিশুসহ যাত্রী সেবার উন্নয়নে নারী নার্সরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। দক্ষ, চটপটে, স্মার্ট—এই মহিলারা সাধারণ যাত্রীদের কাছে ‘ট্রেনবালা’ নামে পরিচিত। শুধু কক্সবাজার রুটেই নয়, সব বিরতিহীন ট্রেনে এই সেবা নিশ্চিত করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী নারী উন্নয়নে বিশ্বাসী। রেলওয়েতে ট্রেনের চালক-গার্ডসহ বিভিন্ন পদে নারীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। যুগান্তর প্রতিবেদকের কথা হয় গত দুই দিন ধরে কক্সবাজার এক্সপ্রেসে কর্মরত অন্তত ৫০ জনের সঙ্গে। একই সঙ্গে সাধারণ ট্রেন যাত্রীরাও জানান, ট্রেনে যাত্রীসেবায় নারীদের আন্তরিক আতিথেয়তার প্রশংসা পাচ্ছেন।

বিশেষ করে ট্রেনের নারী ও শিশু যাত্রীরা খুবই খুশি। স্নাতকোত্তর শেষ করে এ পেশায় আসা তরুণী ফারিয়া বিনতে হোসেন বলেন, ট্রেন যাত্রীসেবায় এমন উদ্যোগ আমাদেরও সম্মানের। যাত্রীরা আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন। চলন্ত ট্রেনে পরিষেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমরা প্রশিক্ষিত। ফলস্বরূপ, আমি পরিষেবাটি নিশ্চিত করতে পেরে খুশি।

শনিবার কমলাপুর স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি এসি বগির দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ‘ট্রেনবালা’ জান্নাত আক্তার। ওই দরজা দিয়ে ট্রেনে ওঠা সব যাত্রীকে আন্তরিক হাসি দিয়ে অভ্যর্থনা জানাচ্ছিলেন তিনি। ট্রেনে উঠতে মহিলারা হাত ধরে বাচ্চাদের সাহায্য করছিলেন। প্রতিটি দরজার পাশে দাঁড়িয়ে এই তরুণীরা হালকা নীল শার্ট, নেভি ব্লু স্যুট-প্যান্টের সাথে মানানসই টাই এবং জুতা পরেছিলেন। সাদিয়া আক্তার প্ল্যাটফর্ম থেকে ৭০ বছর বয়সী এক নারী যাত্রীকে ধরে ট্রেনে উঠছিলেন। সাদিয়া বৃদ্ধ যাত্রীকে ট্রেনের সিটে ঠেলে দিয়ে নির্ধারিত সিটে বসালেন।

সাদিয়া বলেন, খুব ভালো লাগছে। সাধারণ যাত্রীরা সম্মান দেখাচ্ছেন। আমরা সবাইকে স্যার বলে সম্বোধন করি। উত্তরে কেউ কেউ ম্যাডামও ডাকে। যাত্রীদের এমন আচরণে আমরাও উৎসাহিত হই।

নাদিয়া সুলতানাসহ আরও অন্তত ৪ জন ট্রেন কর্মী জানান, তারা ঢাকা থেকে কক্সবাজার এবং কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের সেবা দিচ্ছেন। এমনকি রাতের ট্রেনেও সেবা নিশ্চিত করছে তারা।

কক্সবাজার থেকে আসা যাত্রী জাকির হোসেন জানান, তার বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও তিন মেয়ে কমলাপুর স্টেশনে নামেন। ট্রেনের ভিতরে এবং বাইরে ট্রেনম্যানদের যে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।

ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রী সিনথিয়া জাকির (১৮) বলেন, এই তরুণীরা খুবই স্মার্ট। বিনয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক মহিলাও যাত্রীদের টয়লেটে যেতে সাহায্য করছিলেন। বাংলাদেশ রেলওয়ে অনবোর্ড ক্যাটারিং সার্ভিস প্রোভাইডার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এসএ করপোরেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ আলম যুগান্তরকে বলেন, যাত্রীসেবায় সরকারের এমন উদ্যোগ সাধারণ যাত্রীদের খুশি করছে।

এসএ কর্পোরেশনের মাধ্যমে অস্থায়ীভাবে রেলওয়েতে চাকরি করছেন এই তরুণীরা। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই সাধারণ রেল যাত্রীরা সর্বোচ্চ স্তরের পরিষেবা নিয়ে যাতায়াত করুক।

পূর্ব রেলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ট্রেনে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়া এসব নারীর পদবী স্টুয়ার্ড। তবে রেলের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ যাত্রীরা ট্রেনবালা বলে ডাকে। তরুণীদের পোশাক থেকে শুরু করে সেবার ধরন সবই বিমানের মতো। আমরা তাদের এয়ারম্যানের মতো প্রশিক্ষণ দিয়েছি।

রেলওয়ের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুল আহসান বলেন, সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে আমরা যে সহযোগিতা পাচ্ছি তাতে আমরা খুবই খুশি। তরুণীরাও সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছেন। সমস্ত বিরতিহীন ট্রেনে ‘ট্রেনবালা’ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাত্রী সেবায় সাধারণত নারীরা ভালো করবেন।

About Zahid Hasan

Check Also

জাহ্নবী কাপুরের ভিডিও ভাইরাল (ভিডিও)

মন্দিরের সিঁড়ির একপাশে অসংখ্য ভাঙা নারিকেল। তার পাশে থেকে হামাগুড়ি দিয়ে উপরে উঠছেন বলিউড অভিনেত্রী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *