একটি চক্র অবৈধভাবে অভিবাসী শ্রমিকদের কাছে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব বলেন, এ অনিয়মের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা ও কিছু মানি এক্সচেঞ্জার জড়িত। মাহবুব হোসেন।
সচিব বলেন, এসব অসাধু কর্মকর্তার কারণে ব্যাংকিং খাত প্রতিদিন শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুদক সচিব সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গতকাল সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিমানবন্দরে দুদকের এনফোর্সমেন্ট অপারেশনে সংঘবদ্ধ চক্রটির সন্ধান পাওয়া যায়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নগদ ও বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবাসী শ্রমিকরা যে মূল্যবান রেমিট্যান্স নিয়ে এসেছেন তা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে জাতীয় রিজার্ভে জমা হওয়ার কথা। কিন্তু অসাধু ব্যাংকাররা ব্যাংকের অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে সংগৃহীত না দেখিয়ে নিজেরাই কিনে বাজারজাত করে। পরে তা আবার মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়। এভাবে দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য পেয়ে এবং সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি এনফোর্সমেন্ট অপারেশন পরিচালনা করা হয়।
দুদক সচিব মাহবুব হোসেন জানান, অভিযান চালিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার কালোবাজারে জড়িত ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জারদের একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে।
দুদক সচিব বলেন, বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিক ও বিদেশ থেকে যাত্রী বাংলাদেশে আসেন। তারা তাদের সাথে আনা বৈদেশিক মুদ্রা টাকায় বিনিময় করে বিমানবন্দরের ব্যাংক বুথ এবং মানি এক্সচেঞ্জারে। “বিদেশী মুদ্রা নগদ ভাউচার” আইন, নিয়ম এবং প্রবিধান অনুযায়ী দিতে হবে। কিন্তু ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জাররা ভাউচার ইস্যু না করে বা জাল ভাউচার দিয়ে সরাসরি বৈদেশিক মুদ্রা গ্রহণ করে এবং বিনিময়ে টাকা দেয়।
এ ছাড়া তারা স্বাক্ষরবিহীন, জাল ভাউচার বা নগদকরণ স্লিপ দেয়। এই বৈদেশিক মুদ্রার ক্রেতারা এটিকে ব্যাংক এবং মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে বা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত অ্যাকাউন্টে প্রধান হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে না।
দুদকের অভিযানে জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক এবং এভিয়া মানি এক্সচেঞ্জ এবং ইম্পেরিয়াল মানি এক্সচেঞ্জের অবৈধ ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। বিমানবন্দরে মুদ্রা এবং মানি লন্ডারিং।
দুদক সচিব বলেন, এ অনিয়মের কারণে ব্যাংকিং খাত থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা বঞ্চিত হচ্ছে। অপরাধের সাথে জড়িতরা অবৈধভাবে ক্রয়কৃত ডলার, ইউরো, রিয়াল, রিঙ্গিত, পাউন্ড, দিনার এবং অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে এবং অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারকারী, বৈদেশিক মুদ্রা কালোবাজারি এবং অর্থ পাচারকারীদের কাছে সরবরাহ করে।