সম্প্রতি সারা-দেশজুড়েই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন খুলনার মহেশ্বরপাশা এলাকার গৃহবধূ রহিমা বেগম ও তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। নিখোঁজের প্রায় ২৮ দিন পর গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুর এক আত্মীয়র বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় রহিমা বেগমকে। এর আগে গত ২৭ আগস্ট রাতে পানি আনতে বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তিনি।
আর এ ঘটনার পর থেকে মরিয়ম মান্নানের লাইমলাইটে আসা, তার বিভিন্ন পোস্ট, তার মায়ের মরদেহ পাওয়ার দাবি সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ভাবিয়ে তুলেছে।
রহিমাকে পেয়ে মরিয়মের ভাষাও বদলে যায়। গণমাধ্যমের পাঠক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা যখন এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় ব্যস্ত, তখন আরেকটি অভিযোগ উঠেছে। মরিয়ম মান্নান প্রভাবশালী, ঢাকার বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে তার সম্পর্ক!
রহিমা বেগম নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি ফুলবাড়ীগেট এলাকার ব্যবসায়ী হেলাল শরীফের স্ত্রী মনিরা আক্তার এ অভিযোগ তোলেন। হেলাল শরীফকে আটক করা হয়েছে।
মনিরা আক্তার জানান, তার স্বামী হেলাল কোনো অপরাধ ছাড়াই গত ২৮ দিন ধরে কারাগারে রয়েছেন। গত ৩০ আগস্ট পুলিশ হেলালকে গ্রেপ্তার করে। মনিরা অক্টোবরে সন্তান প্রসব করার কথা থাকলেও স্বামীর দুশ্চিন্তায় গত ৬ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মেয়ের জন্ম দেন। সে পরিস্থিতিতে স্বামীকে পাশে পাওয়া মরিয়ম মান্নানের জন্য হয়নি বলে দাবি তার।
মনিরা আরও বলেন, মরিয়ম খুবই প্রভাবশালী। ঢাকার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। আমার মনে হয় সে নিজেই তার মাকে গুম করার নোংরা কাজ করেছে। প্রভাবশালীদের দিয়ে সে পুলিশকে প্রভাবিত করে আমার স্বামীকে জেল খাটাচ্ছেন।
তিনি বলেন, মরিয়মের কারণে আমার স্বামী কোনো অপরাধ না করেই জেলে আছেন। আমাদের হয়রানি, জরিমানা এবং মানহানি করা হয়েছে। আমরা নিশ্চিত এই ঘটনার সাথে গ্রেফতারকৃত কেউ জড়িত নয়।
মনিরা আশা করছেন তার স্বামী শিগগিরই জেল থেকে মুক্তি পাবেন। অন্যথায় তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।
মরিয়মের বিরুদ্ধে মনিরা আক্তারের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে রহিমা বেগমের নিখোঁজের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খুলনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বিকেলে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এ অভিযোগের বিষয়ে আমি জানি না। রহিমা বেগম আদালতে জবানবন্দি দিচ্ছেন। এসব বিষয় পরে জানানো হবে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই স্ট্যাটাস দিয়ে দাবি করে বলেছেন, মরিয়ম মান্নান হয়তো নিয়মিত ক্রাইম পেট্রল দেখতেন, আর সেখান থেকেই এই নাটক সাজিয়েছেন তিনি।