গতকাল রাজশাহী বিভাগীয় শহরে হয়ে গেল বিএনপির সমাবেশ, তবে এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না দলের কেন্দ্রীয় একজন গুরুত্বপূর্ন নেতা যার নির্বাচনী আসনও ঐ বিভাগে। যার কারণে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দেয় প্রশ্ন, শুরু হয় আলোচনা। জানা গেছে এই গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশ হাজির হননি দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তবে তার উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিয়ে স্পস্ট কোনো কারন কেউ জানাতে পারেননি।
বিষয়টি নিয়ে মাঠে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদেরও বেশ কৌতুহল ছিল। কেন্দ্রীয় নেতারাও সাধারণ নেতাকর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। তবে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদের স্ত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফী পা”পিয়া। সমাবেশে বক্তব্যও দেন তিনি। সেখানে এমপি হারুনের অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশে এমপি হারুনুর রশীদ উপস্থিত না থাকায় রাজশাহীর বিভাগীয় সমাবেশে তার নিজ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। এ নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। তবে এ বিষয়ে রাজশাহীর বিএনপি নেতারা কিছু বলতে চাননি।
এদিকে বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজক কমিটির একাধিক প্রস্তুতি সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য অংশ নিয়েছিলেন। তবে সমাবেশের দিন তাকে অনুপস্থিত দেখে মাঠে উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেন তিনি নিজ বিভাগের এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত থাকেননি?
অন্যদিকে বিএনপি নেতা হারুনুর রশীদের ব্যক্তিগত সহকারী সারোয়ার হোসেন জানান, সম্প্রতি তিনি অস্ট্রেলিয়া গেছেন। হারুনের মেয়ে জামাই অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। যাওয়ার আগে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের এ কথা জনিয়ে দিয়েছিলেন। রাজশাহীর জনসভার কারণে শেষ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার বিমান টিকিট বাতিলের চেষ্টা করেও পারেননি বিএনপি নেতা হারুন। ফলে দু’দিন আগে তিনি অস্ট্রেলিয়া গেছেন।
এদিকে সমাবেশে উপস্থিত বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির সিনিয়র নেতা কবির হোসেন শারীরিকভাবে বর্তমানে চলাফেরা করতে পারছেন না। তার বয়সের কারণে, তিনি হুইল চেয়ারে ঘুরে বেড়ান এবং এবং সার্বক্ষণিক অন্যের সহযোগীতায় চলেন। এছাড়াও তিনি রাজশাহীতে গণসভায় যোগ দিয়ে হুইল চেয়ারে বসে উপস্থিত নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। সেক্ষেত্রে একান্ত জরুরি পারিবারিক বিষয় না হলে হারনের উচিত হয়নি বড় দলীয় সমাবেশে না থাকা। অস্ট্রেলিয়ায় কন্যার সাথে দেখা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক বিষয় নয়।
এমপি হারুনের স্ত্রী বিএনপি নেত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া শনিবার সন্ধ্যায় দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমাদের মেয়ে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন রয়েছে। অভিভাবক হিসেবে হারুনের আমন্ত্রণ রয়েছে। চার মাস আগে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার টিকিট বুক করেছিলেন হারুন। রাজশাহীতে জনসভায় যোগ দিতে শেষ মুহূর্তে বিমানের টিকিট বাতিলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ফলস্বরূপ, তিনি অবশেষে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান।
এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির দলনেতা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে অনেক নেতাকর্মী আমাদের নিকট প্রশ্ন করেছেন। আমি এ বিষয়ে তেমন কিছু জানতাম না। পরবর্তীতে জানতে পারি হারুন অস্ট্রেলিয়ায় গেছেন। পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ কোনো এক বিষয় তিনি অস্ট্রেলিয়া গিয়েছেন। তবে তিনি তার বিভাগীয় এই সমাবেশে উপস্থিত থাকলে খুব ভালো হতো। কিন্তু ভিন্ন কোনো কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি।