বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পর পর তিনবার নির্বাচত হয়েছেন। ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ যাতে দুঃখ-কষ্টে না থাকে সেই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী সব সময় মাথায় রাখেন এবং জনগনের কোনো যেকোনো ধরণের সমস্যায় তিনি বসে না থেকে সঙ্গে সঙ্গে সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরে গিয়েছেন। যুক্তরাজ্যে বিবিসির এক প্রশ্নে তিনি বলেছেন শুধু আওয়ামী লীগের সময়েই নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলেই বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যোগ দিতে তিনি যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। সেখানে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে নিয়ে স্মৃতিচারণের পাশাপাশি বাংলাদেশের নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে তার সরকারের অঙ্গীকার সম্পর্কে বিবিসির সাংবাদিক লরা কুনেসবার্গের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রতিষ্ঠার জন্যই আমার সংগ্রাম।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুমের বিষয়ে অনেকেই অভিযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা কতটা সত্য তা বিচার করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে আমার বাবা (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে) প্রাণনাশ করা হয়। তিনি তখন দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং আপনি জানেন আমার পুরো পরিবার, আমার মা, আমার তিন ভাই, দুই ভাতিজি, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ মোট ১৮ জনকে প্রাণনাশ করা হয়েছে। তারপর থেকে দেশ ২১বছর ধরে বারবার অভ্যুত্থান প্রত্যক্ষ করেছে। প্রায় ২০ টি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা হয়েছে এবং প্রতিবার রক্তপাত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র ছিল না, গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না, তাই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামরিক শাসকরা দীর্ঘদিন দেশ শাসন করেছে এবং তারা দল গঠন করেছে এবং তারা কখনো ভোটের জন্য জনগণের কাছে যায়নি। তারা (সামরিক স্বৈরশাসক) সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করেছে, প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য সবকিছু ব্যবহার করেছে।
কমনওয়েলথ আপনার এবং বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই (এর মূল্য অনেক), আমরা যখন একসঙ্গে থাকি, তখন অনেক সুযোগ থাকে। তাই এটা ভালো এবং গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের একটি জায়গা আছে যেখানে আমরা আমাদের মতামত বিনিময় করতে পারি। কিছু ধারণা গ্রহণ করতে পারি এবং দেশ বা মানুষের জন্য কিছু ভাল কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, একটি দেশ একা চলতে পারে না। কারণ এটি একটি আন্তঃনির্ভর বিশ্ব। সুতরাং, এই পরিস্থিতিতে, সদস্য দেশগুলোর জন্য কমনওয়েলথের অর্থ অনেক বড়। প্রতিটি দেশ একসাথে কাজ করতে পারে।
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সাথে ব্যক্তিগত স্মৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, ১৯৬১ সালে যখন তিনি (রাণী) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সফর করেছিলেন এবং তিনি তার সাথে (ব্যক্তিগতভাবে প্রথমবারের মতো) দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তখন খুব ছোট, বাবার (বঙ্গবন্ধুর) অফিসে যেতাম। কারণ আমরা জানতাম সে সেই পথেই যাচ্ছে। তাই আমরা সবাই, পুরো পরিবার, দূরবীন নিয়ে জানালার কাছে অপেক্ষা করছিলাম। ফলে আমরা তাকে আরও স্পষ্টভাবে দেখতে পেতাম। তিনি বলেছিলেন যে তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে প্রতিটি কমনওয়েলথ সম্মেলনে রানির সাথে দেখা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রায় সাতটি কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশ নিয়েছি এবং ততবারই তার সাথে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। আমি রানীর আমন্ত্রণে অলিম্পিক গেমসে অংশ নিতে গিয়েছিলাম। এ কারণে তার সঙ্গে দীর্ঘদিন আলোচনাও হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহসিকতার সহিত দেশের মধ্যে নির্মাণ করেছেন অসংখ্য মেগা প্রজেক্ট যেগুলো আসলেই বাংলার মাটিতে বিস্ময়। এত বড় বড় মেগা প্রজেক্ট করা সহজ কোনো ব্যাপার না। প্রধানমন্ত্রী নিজ অর্থায়নে এসব মেগা প্রজেক্ট নির্মাণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই অবদান বাংলার মানুষ কোনোদিনি ভুলতে পারবে না। চিরকাল থাকে সম্মানের সহিত স্বরণ করবে।