ডিবি পরিচয়ে আজকাল অনেকেই অনেক অন্যায়মূলক কাজ করছে। ডিবি হলো হলো একটি গোয়েন্দা বিভাগ। বিভিন্ন সুকৌশলে অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে থাকেন। তাদের সুনিপণ কোশল সত্যিই অনেক প্রশংসনীয়। তবে ডিবির পরিছ দিয়ে আইনবিরোধী কোনো কাজ করা অপরাধমূলক কাজ। সম্প্রতি জানা গেছি এক এএসআই ডিবি পরিচয় দিয়ে ৩৮ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনতাই করছে এবং তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) তোফাজ্জল হোসেনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বায়েজিদ মোল্লা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোনার অলঙ্কার ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার (১৮ জুলাই) রূপনগর থানা এলাকা থেকে এএসআই জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাইলে বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সোনা ডাকাতির মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে সোনা চুরির সঙ্গে এএসআই জাহিদুলের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এসআই বায়েজিদ মোল্লা জানান, চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে চুরির টাকাসহ ৫ গ্রেফতার
স্বর্ণ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলার জবানবন্দিতে বলা হয়, টিটু প্রধানিয়া রাজধানীর তাঁতীবাজার এলাকার একটি স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে কাজ করতেন। রোববার (১৭ জুলাই) সকালে তিনি একটি ব্যাগে করে স্বর্ণালংকার নিয়ে যাচ্ছিলেন। এগুলো টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও সখীপুরের বিভিন্ন স্বর্ণের দোকানে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। তিনি গাবতলী পৌঁছে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এরপর অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ডিবি পরিচয় দিয়ে তার নাম, ঠিকানা ও পেশা জানতে চান। টিটু এসময় নিজের পরিচয় দেন এবং ২৬ লাখ টাকার ৩৮ ভরি ১৪ আনা স্বর্ণালংকারের কথা জানান। তখন ওই ব্যক্তি স্বর্ণালংকারের কাগজ দেখতে চান। টিটু যখন ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন সেখানে ৪ থেকে ৫ হাজির হন এবং স্বর্ণালংকারের ব্যাগ ছিনিয়ে নেন।
জবানবন্দিতে আরও বলা হয়, টিটুকে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেলে করে মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তুলে বিজয় সরণি এলাকায় নামায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বায়েজিদ মোল্লা জানান, টিটু মূল মোটরসাইকেলের নম্বর দুটি রেখেছিল। ওই মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করতেন এএসআই জাহিদুল ইসলাম। তার হেফাজত থেকে মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন এটি তার ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল। তবে বিআরটিএ থেকে মোটরসাইকেলের মালিকানা এখনো যাচাই করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, একজন সরকারী কর্মচারী এবং জনগনের রক্ষক হয়ে এএসআই এমন একটি অনাকাঙ্খিত কাজ করবে সেইটা কেউ কখনও কল্পনাও করতে পারেনি। অপরাধ দমনের জন্য নিয়োজিত মানুষরা যদি করে বেআইনি কাজ তাহলে মানুষ তাদের উপর আর ভরসা করতে পারবে না। বিষয়টি আসলেই খুব দুঃখের।