কয়েকদিন আগে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে, যুক্তরাষ্ট্রে তার ১৪টি বাড়ি রয়েছে, এবং এই বাড়িগুলোর মুল্য কোটি কোটি টাকা। এই বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর তাকসিমের বিষয়ে নড়েচড়ে বসে দূর্নীতি দমন কমিশন। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার পর সেগুলো গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে।
১৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আগামী ৪ এপ্রিল তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) তাদের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামানএ আদেশ দেন। বাদীর আইনজীবী গাফফার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০২২ সালের জুনে, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সরকার মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসা’মিরা হলেন- ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী শারমিন হক আমির, সাবেক রাজস্ব পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান, প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান, প্রকৌশলী মো. বদরুল আলম, রাজস্ব পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন, জনতা ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম শ্যামল বিশ্বাস, উপসচিব শেখ এনায়েত উল্লাহ ও উপ-প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সালেকুর রহমান। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আ”’সামিদের বিরুদ্ধেও আবেদন করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ১৭৩ টাকা ঢাকা ওয়াসা থেকে রাজস্ব আদায় কাজ বাবদ পায়। আর ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ অর্থবছরে একই কাজ বাবদ সমিতি আয় হয় ৩৪ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯০ টাকা। এর মধ্যে ২০১৭ থেকে ২০১৮ অর্থবছরে সমিতির হিসেবে জমা হয় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৩ টাকা। ৬টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে অবশিষ্ট ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদদে ও নির্দেশে অন্য আসামিরা আত্মসাৎ করে।
এ ছাড়া হেফাজত থেকে সোসাইটির গাড়িসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিসহ প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পদ চু”রির অভিযোগ ওঠে। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সমবায় অধিদপ্তরের অডিট প্রতিবেদনে এ অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।
প্রসংগত, ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যুয়ারেজ অথরিটি (ওয়াসা) পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবা প্রদানকারী একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। বছরের পর বছর ধরে, ওয়াসা তহবিল আত্মসাৎ, সম্পদের অব্যবস্থাপনা এবং অনিয়মিত নিয়োগ সহ দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে। এই দুর্নীতির অভিযোগ জনগণের ক্ষোভের দিকে পরিচালিত করেছে, এবং সংস্থাটি জনগণকে নির্ভরযোগ্য পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন পরিষেবা প্রদানে অদক্ষতা এবং অক্ষমতার জন্য সমালোচিত হয়েছে।