নাটোরের সিংড়ায় রাতের আঁধারে ইউনুস আলী নামে এক যুবককে বিধবার বাড়ি থেকে অবাঞ্ছিত অবস্থায় আটক করেছে এলাকাবাসী। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা তাদের বিপুল পরিমানের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে উপজেলার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী ও যুবলীগের কর্মী সাইফুল ইসলামকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আটক করে স্থানীয় পুলিশ স্থানীয় সুত্রে এমন তথ্য জানা যায়। এর আগে সোমবার (২০ জুন) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নাটোরের সিংড়ায় এক বিধবা বাড়ি থেকে ইউনুস আলী নামে এক যুবককে আটক করেছে স্থানীয়রা। ইউনুস আলী বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাল এলাকার তাইজল ইসলামের ছেলে। অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা লাখ লাখ টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী ও যুবলীগ কর্মী সাইফুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। এলাকাবাসী জানায়, বাঁশবাড়িয়া গ্রামে ধান কাটতে আসলে এক বিধবা স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় ইউনুস আলীর। এরপর তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোমবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ইউনুস আলী গোপালের বাড়িতে যান। বিষয়টি টের পেয়ে রাত ১টার দিকে স্থানীয়রা তাদের দুজনকে আটক করে। পরে স্থানীয়রা ইউনুস আলীকে বারান্দার খুঁটিতে বেঁধে ফেলে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে তার অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করেন।
জানা গেছে, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী, ইউপি সদস্য কুরবান আলী, আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন অরন, যুবলীগ নেতা সবুজ আলী, সাইফুল ইসলাম, শাহিন আলম, সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজন তাদের আটক করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আসামিরা ওই গ্রামের মজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে বিধবার জমির দলিল নিয়ে যুবকের বাবার কাছ থেকে আনুমানিক ৬০ হাজার টাকা ও আরও একটি মুনাফা নিয়েছে। মজিবুর রহমান বলেন, বিধবা আজ আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু কত টাকা তা বলা যাবে না, সমস্যা আছে। সেই মহিলা নিজেই বলবেন। যুবলীগ নেতা সবুজ আলী বলেন, আমরা রাতেই তাদের অবমাননাকর অবস্থায় আটক করি। সকালে ইউনুস আলীর বাবা বড়াইগ্রামের জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে এসে নিয়ে যান। তবে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলীর মোবাইল ফোনে দুপুরে একাধিক কল করে ব্লক পাওয়া যায়। বিকেলে তাকে আটক করে পুলিশ।ইউপি সদস্য কুরবান আলী বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, সারাদিন সিংড়ায় বৈঠকে ছিলাম। আমাকে ফ্রেম করার জন্য নামকরণ করা হয়েছে। ইতালিয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মতিউর রহমান রাজা বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সবাই খুব নিয়মানুবর্তিতা এবং বিনয়ী মানুষ। পুলিশ দুজনকে আটক করেছে বলে শুনেছি। তবে টাকা নিয়ে তারা ওই যুবককে ছেড়ে দিয়েছে কিনা জানি না। সিংড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ধান কাটতে এসে পরিচয়, তার পরেই মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিধবা নারীর সাথে এক যুবকের। এই প্রেমের সম্পর্ক আস্তে আস্তে শারিরীক সম্পর্কের দিকে মোড় নিতে শুরু করে। সম্প্রতি ইউনুস নামের এক প্রেমিক তার বিধবা প্রেমিকার সাথে রাতের আধারে প্রেম করতে গিয়ে হাতেনাতে এলাকাবাসীর কাছে ধরা পড়ে হেনস্তার স্বীকার হয়েছে এমনই একটি ঘটনা স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে। তবে এই যুগলকে হাতেনাতে ধরা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় আ.লীগের নেতা কর্মীদর সাথে বিপুল টাকার বিপুল টাকার বিনিময়ে রফা করা হয়েছে বলে জানা গেছে স্থানী সুত্রে।