এখন থেকে কোন এলাকায় কতটা লোডশেডিং হবে তার রুটিন তৈরি করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লোডশেডিংয়ের বিষয়েও তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। বুধবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর ভার্চুয়াল উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। একই অনুষ্ঠানে তিনি চুয়েটের শেখ জামাল ডরমেটরি ও রোজি জামাল ডরমেটরি উদ্বোধন করেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কারণে আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেশীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, সেইসাথে সমস্ত পণ্য আমদানি করতে হবে। সব কিছুর দাম এমনভাবে বেড়ে গেছে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে… আমাদের নিজেদের যতটুকু গ্যাস আছে, তা ছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখাটাই কঠিন হয়ে পরেছে। অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। আমিও সে বিষয়ে আপনাকে জানাতে চাই। বুধবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’, শেখ জামাল ডরমেটরি’ এবং ‘রোজি জামাল ডরমেটরি’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে, সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম বাড়ছে। ভোজ্য ও জ্বালানি তেল ছাড়াও বিদ্যুৎ, সার, গমসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে। আমাদের ডিজেলের ওপর আমদানি নির্ভরতা রয়েছে। আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে ডিজেলের দাম। ভবিষ্যৎ আর্থিক ব্যবস্থা কী হবে তার উত্তর কেউ দিতে পারে না। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী সংকট তৈরি করেছে। সংকটের প্রেক্ষাপটে আমেরিকা ও ইউরোপের রাশিয়ার ওপর আরোপিত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার ফল এই যে, এখন তেলের দাম বাড়ছে, ডিজেলের দাম বাড়ছে। সব কিছুর দাম বাড়ছে। এলএনজির দাম বাড়ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমদানি করা গ্যাসে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখতে সরকারকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। কারণ, আমাদের মানুষকে খাবার দিতে হবে, চিকিৎসা দিতে হবে, গৃহহীনদের ঘর দিতে হবে… প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের দেখাশোনা করতে হবে। সঙ্কট মোকাবেলায় তার পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে এখন একটাই পথ। কবে, কত ঘণ্টার লোডশেডিং হবে প্রতিটি এলাকায়, রুটিন তৈরি করে লোডশেডিং হবে সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। যাতে সে সময় মানুষ প্রস্তুত হতে পারে। যাতে আমরা জনগণের কষ্ট লাঘব করতে পারি। সেটাই এখন আমাদের দেখতে হবে। আশা করি দেশবাসী অন্তত এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করবেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু এখন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সীমিত করতে হবে। কারণ বিদ্যুতের ভর্তুকির পরিমাণ অনেক গুণ বেড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে তাদের সাধ্য অনুযায়ী বিদ্যুৎ সংরক্ষণের আহ্বান জানান। তিনি ওই এলাকায় পর্যায়ক্রমিক লোডশেডিংয়ের জন্য একটি রুটিন তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।