বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বর্তমানে ভিন্ন ধারা প্রবাহিত হচ্ছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি এবং পাশাপাশি অন্য রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতাসীন আ.লীগ সরকারকে নামানোর জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের আন্দোলনের পাশাপাশি তারা বিভিন্ন দেশের কুটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। এবার গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূরের একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সেই জল্পনাকে আরো উস্কে দিলো।
বিদেশে অবস্থানরত নুরুল হক নূরের একটি ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদস্য মেন্দি এন সাফাদি এই ছবিতে নূরের সঙ্গে আছেন, একটি ভবনের সামনে হাস্যোজ্জ্বল তারা।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে ভিপি নূরের দল গণ অধিকার পরিষদ বিবৃতি পাঠিয়েছে। দলটি এ সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং প্রকাশিত ছবি ও সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
যদিও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডাকসুর এই সাবেক ভিপি মোসাদের সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে দেখা করেছেন। এর আগে বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীর ভারত সফরের সময় ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে একটি ছবি গণমাধ্যমে ফাঁ”স হয়। তখন তা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।
সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, নূর অনলাইন লাইভ ও বক্তৃতায় খুব সক্রিয় কেন? কেন তিনি গণমিছিলের কর্মসূচি নিয়ে দেশে নেই? ইসরায়েলের মেন্ডি এন সাফাদি তাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন এই চিন্তা থেকেই তিনি এ কাজ করছেন। দেশটির নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে নূরের বৈঠক নির্ধারিত হবে- এমনটাই জানিয়েছেন তার লোকজন।
রাত ১০টার দিকে ভিপি নূরের সঙ্গে ফোনে কথা হয় দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমের। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলকে প্রভাবিত করার কোনো সুযোগ এদেশের নেই। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার কোনো সদস্যের সঙ্গে আমাদের মিটিং বা বৈঠক করার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা বিভ্রান্তিকর সংবাদ। গণঅধিকার পরিষদ সরকারের বিরুদ্ধে কোনো গোপন ষড়য”ন্ত্রে জড়িত নয়। আমরা প্রকাশ্যে সরকার পরিবর্তনের জন্য কাজ করছি। এই ছবি এডিট করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর ষড়য”ন্ত্রে লিপ্ত আওয়ামী লীগের সাইবার টিমের সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, অনেক রাজনীতিবিদ মনে করছেন, বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সরকারকে ক্ষমতায় থেকে নামাতে বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছে। তবে তারা জোর দিচ্ছে দুটি বিষয়ের ওপর- একটি হলো বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা এবং সেইসাথে বাইরের দেশগুলো দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের উপর চাপ সৃষ্টি করা। তারা এই দুইটি তৎপরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও মনে করেন অনেক আওয়ামীপন্থী রাজনীতিবিদেরা।