বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো বিদেশে অর্থ পাচার। প্রতিবছর বিপুল পরিমান অর্থ পাচার হয়ে থাকে বিদেশে। এবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমান অর্থ পাচারের বিষয়টি সামনে এনেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তিনি সংসদে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ বিষয়ে জানান। এছাড়া তিনি তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের নামও উল্লেখ করেন।
তারেক রহমান ও গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিদেশে পাচার হওয়া ৫০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বলে জানান মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেন, তারেক রহমান ও মামুনের আই কন্টাক্ট ছাড়া ব্যাংকের ভল্টে থাকা টাকা বের করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আপাতত টাকা ফেরত আনা যাচ্ছে না।
আজ জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য স্বপন বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিদেশে পাচার করা ৪০ কোটি টাকা এফবিআইয়ের সহায়তায় বাংলাদেশে ফেরৎ আনা হয়েছে। তারেক ও মামুনের আরো টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। তারেক ও মামুনের ৫০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বিদেশি ব্যাংকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো তারা যে ব্যাংকের ভল্টে টাকা রেখেছেন তা তারেক ও মামুনের আই কন্টাক্ট ছাড়া খুলবে না। ফলে এই মুহূর্তে টাকা ফেরত আনা যাচ্ছে না। তবে তারেক-মামুনসহ বিএনপি নেতাদের বিদেশে পাচারকৃত অর্থের হিসাব দ্রুতই প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জানান, তারেক রহমান তার নিজের মামা এবং মামার বন্ধুদের প্যা”/দানি খেয়ে ২০০৭ সালে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। আর মামুন এখন দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কারাগারে। শুধু তারেক ও মামুন নয়, বিএনপির অনেক নেতার বিদেশে টাকার হদিস পাওয়া গেছে। তদন্ত চলছে। এ কারণে আমরা এই মুহূর্তে তা সংসদে উপস্থাপন করতে পারছি না। তবে শিগগিরই তারেক মামুনসহ বিএনপি নেতাদের তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরা হবে এবং অর্থ ফেরত এনে জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ করা হবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য তুলে ধরে আবু সাঈদ আল মাহমুদ বলেন, বিএনপি আমলে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, কোকো ও তার বন্ধু মামুনের লু”টপা’টের কারণে খাম্বা তারেকের লু”টপাটের কারণে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন চার হাজার ৩০০ থেকে তিন হাজার ২০০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছিল। আজকে বাংলাদেশ ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
নারীর ক্ষমতায়নে সরকার ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে মহিলা ও শি”শু প্রতিমন্ত্রী বলেন, জয়িতা ফাউন্ডেশন নারী উদ্যোক্তা তৈরি করছে এবং তৃণমূল নারী উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য বাজারজাত করছে। ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে এক কোটি নারীর ক্ষমতায়ন করা হচ্ছে। দেশের ৬৪টি জেলায় শিক্ষিত নারীদের কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান, তৃণমূল পর্যায়ে ২ লাখ ৫৬ হাজার প্রান্তিক নারীকে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রসংগত, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ বিদেশে ধনীক শ্রেণী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা পাচার করে থাকে। অথচ পরিতাপের বিষয় যে বিদেশে যারা শ্রমিক হিসেবে যান সেই সকল মানুষেরা বিপুল পরিমান অর্থ দেশের জন্য নিয়ে আসেন। বাংলাদেশ আজ সত্যিই সিঙ্গাপুর হতে পারতো যদি বিদেশে অর্থা পাচার না হতো, এমনটি বলেছেন অনেক বিশ্লেষকেরা।