সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও দ্রব্যমূল্য স্ফিতীর কারনে অর্থনৈতিক দিক থেকে কিছুটা চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ কিছুটা কমে গেছে। বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। তবে বাংলাদেশে এখনও অর্থনৈতিক দিক থেকে তেমন কোনো সংকটে পড়েনি, এমনটিই দাবি করেছেন অর্থ মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ নেব। কিন্তু এখন আমাদের কোনো ঋণের প্রয়োজন নেই। যদি প্রয়োজন থাকে অবশ্যই আমরা নেবো। আমরা সেটা আমাদের স্বার্থেই নেব। অর্থমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়ে বললেন, নিজেদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার মতো কিছু আমরা করবো না।
বুধবার (২০ জুলাই) সরকারি অর্থনৈতিক ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ আমাদের যে পরিমাণ অর্থ সাহায্য করেছে, সে পরিমাণ অর্থ কি তারা পায়নি? একদিন পরে আমি তাদের টাকা দিয়েছি এটা তারা বলতে পারবে না। আমাদের যে ঋণ দেওয়া হয়েছে বা দেওয়া হবে তা যথাসময়ে পরিশোধ করা হবে। আমাদের ঋণ দিলে তাদের কখনো সেটা মাফ করতে হবে না। বার বার তাদের আশ্বস্ত করেছি। ঋণ শোধের সামর্থ্য আমাদের ভালো রয়েছে। আমরা পেমেন্ট নিয়ে কখনো ডিলে করিনি। আমরা সবসময় পেমেন্ট করে আসছি।
সংশয়ের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আপনাদের অনেকের সন্দেহ থাকতে পারে যে আমরা অনেক কিছু নেব বা চুক্তি করবো। আমাদের কাছে এ রকম কিছু (প্রস্তাব) আসেনি, আসলে আপনারা জানতে পারবেন। দেশের স্বার্থবিরোধী কিছু করবো না বলে আশ্বস্ত করছি।
আইএমএফ আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কিছু জানায়নি, অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশে আসছে, এটি একটি পরামর্শক কমিটি। তারা পরামর্শ দেয়, আমরাও তাদের পরামর্শ দেই। রিজার্ভের বিষয়টি বিভিন্ন দেশ যেভাবে হিসাব করে, আমরা সেভাবেই করেছি। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমরা সেভাবেই হিসাব করবো।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আইএমএফ দেশে মাঝেমধ্যে আসে। দেখাশোনা করে যায়, তাদের যে পরামর্শ থাকে সেটি দিয়ে যায়। তাদের পরামর্শ সরকারের জন্য নানাভাবে কাজে লাগে। সংস্থাটি সব সময় কিছু সংস্কারমুখী প্রকল্পের কথা বলে।
এদিকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ১ হাজার ৪০ কোটি ৫ লাখ ৫৬ হাজার ২৩২ টাকা ব্যয়ে ১০ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান সময়ে বিশ্বের অনেক দেশ অর্থনৈতিক মন্দাসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সংকটে পড়েছে। আর এই দিক থেকে আইএমএফ এই দেশগুলোকে অর্থনৈতিক দিক থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের অর্থনীতি বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে, যেটা বেশ কিছুটা সংস্কারমুখী। এ দিকে অর্থমন্ত্রী অর্থনৈতিক দিক থেকে নতুন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।