সীতাকুণ্ডে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। দুঃখ, ক্ষোভ, হতাশা, ক্ষোভ প্রকাশ করে বা বিচার দাবি করে নিজের বুকের ওজন কমিয়ে লাভ কী! উল্টো, আমাকে কয়েকদিন এসব নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করতে হবে না। অভিশাপ আসুক আমাদের বুক থেকে। যারা এভাবে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারার ব্যবস্থা করেন তাদের জন্য আল্লাহ চির জাহান্নামের আগুন রাখুন।
পাঠকের গুরুত্ব পূর্ণ মতামত:-
>> আমরা যদি দেশের সব বড় প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকাই যেখানে দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, তাহলে দেখা যাবে এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক কোনো না কোনো পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা।
>> স্যার, চিরকাল নরকে জ্বলবে এই আশায় অনন্তকাল অপেক্ষা করতে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু, বিপদ হলো, এখন থেকে সেই অনন্তকাল পর্যন্ত তারাও নিশ্চয়তা দেবে না যে আমরা শান্তিতে নিঃশ্বাস ফেলব? তাহলে কি আমরা চিরকালের জন্য নিজেদের পুড়িয়ে ফেলব? নাকি তারা অনন্তকাল পর জাহান্নামে যাবে এবং সেই সুদিনের জন্য অপেক্ষা করবে? আমরা মোটা মাথার বাঙালিরা কিছুই বুঝি না।
>> স্যার,,,,,, আমাদের মত তরুণ প্রজন্মের মনের ক্ষোভ এবং চরম ক্ষোভ আসলে আপনার মত গুটিকয়েক প্রতিশ্রুতিশীল মানুষের লেখায় পাওয়া যায়। আমার জন্মভূমি উটে চড়ে।
>> রাষ্ট্র কাউকে না কাউকে ভালো কিছু করার দায়িত্ব দিয়েছে। যারা এই দায়িত্বে অবহেলা করছে তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত!
>> মার্চ ২৬, ২০১৯। বনানীর একটি ২২তলা ভবনের অষ্টম তলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অষ্টম তলা পর্যন্ত আগুন নেভানোর ক্ষমতা আমাদের ফায়ার সার্ভিসের ছিল না।
একজন দমকল কর্মী চিৎকার করে কাঁদছিলেন,
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি দিন, এভাবে আগুন নেভানো সম্ভব নয়…
আপনাদের কারো কি মনে আছে?
তখনই আমাদের ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা বুঝতে পেরেছিল যে তাদের কতটা ‘হেডাম’ দেওয়া হয়েছিল। সঠিক সময়ে আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। 26 জন মারা গেছে। আহত প্রায় ৭৫!
2019 সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি বড় ট্র্যাজেডি ঘটেছিল। চকবাজার। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। আহত ৫২ জন!
গুলশানে ২০১০ সালে ১১! সে সময় ঢাকার নিমতলীতে কয়লা পুড়ে যায় শতাধিক লাশ।
এগুলো কি শুধুই সংখ্যা, মানুষ না?
আজ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে লাশের সংখ্যা ৩১! কোথায় থামবে কে জানে। এদের মধ্যে ৭ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী।
যাদের ঢাল নেই, তলোয়ার নেই- তাদের জীবন দিয়ে আগুন নেভানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেই। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই।
একজনের হাতের কব্জি রাস্তায় পড়ে আছে। আরেকজনের পা নেই। কারো শরীর পুড়ে গেছে, সে বাড়িতে ডেকে হাহাকার করে বলল,
‘মা, আমার শরীর পুড়ে গেছে। আমি হয়তো ফিরব না। আমার হৃদয়ের মেয়ের মুখ আর দেখা হবে না। মা তুমি ওর দিকে নজর রাখো। ‘
তিনি আর বাড়ি ফেরেননি।
তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ বা জ্ঞান দেওয়া হয়নি। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের একজন মুখপাত্রও সাংবাদিকদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
“আমি জানি না কিভাবে এই আগুন নেভাবো।”
কিন্তু এত ঘটনার পরও রুই-হত্যাকারীরা নিজেদের চুল ছিঁড়তে ব্যস্ত।
বিদেশে গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সুন্দর বনে বাঘ গুনতে খরচ হয় কোটি টাকা। বিদেশে আলু চাষ ও ধান চাষ শিখতে কোটি কোটি টাকা খরচ করা জরুরি।
সূত্র: আসিফ নজরুলের যোগাযোগ মাধ্যমের পেজ