সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী যিনি বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন, ফের তিনি তার বক্তব্যের জন্য আলোচনায় এসেছেন। হুম্মাম কাদের চৌধুরী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত এবং সর্বোচ্চ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সালাউদ্দিন কাদেরের পুত্র। গতকাল বুধবার অর্থাৎ ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হুম্মাম। তিনি তার বক্তব্যের শেষ প্রান্তে একটি স্লোগান দেন, যেটা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা সমালোচনা।
গতকালের সমাবেশের শুরুতে হুম্মাম নিজেকে সালাহউদ্দিন কাদেরের ছেলে পরিচয় দেন। বললেন, ‘বেশি সময় লাগবে না। অনেক সিনিয়র নেতা এসেছেন। আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি, বড় নেতা হিসেবে নয়। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হয়ে আজ এসেছি। আপনারা সবাই একসাথে থাকলে আমাদের হারানোর শক্তি কারো নেই।’
সরকারকে উদ্দেশ্য করে হুম্মাম বলেন, ‘আমি এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বলতে চাই, ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়িতে যেতে পারবেন না। আপানাদের বাধ্য করা হবে প্রতিটি শহীদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চাইতে।
বক্তৃতা শেষে হুম্মাম বললেন, যাবার আগে বাবার স্লোগান বলতে চাই। নারায়ে তাকবীর, নারায়ে তাকবীর, নারায়ে তাকবীর। আমরা যখন আবার এই ময়দানে আসব, সরকার গঠন করে আসব।’ হুম্মাম তিনবার ‘নারায়ে তাকবির’ বলে স্লোগান দিলে সমাবেশে উপস্থিত বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেন।
সালাহউদ্দিন কাদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তার সর্বোচ্চ দন্ড কার্যকর হয় ২২ নভেম্বর ২০১৫। তিনি তার বক্তৃতার শুরুতে ‘নারায়ে তাকবীর’ উচ্চারণ করতেন। হুম্মামের বক্তৃতাকালে গতকাল সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বলেন, বৈঠকে এই স্লোগান কেউ দেয়নি। বক্তৃতার শুরুতে হুম্মাম কাদের বলেন, তিনি টার বাবার স্লোগান দিয়েছিলেন।’
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিষয়টি (নারায়ে তাকবির স্লোগান) হুম্মামের ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে বিএনপির রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এটা বিএনপির স্লোগান নয়।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী রাজনীতির জন্য ধর্মকে ব্যবহার করেছেন। তার ছেলেও একই পথে হাঁটছে। মানুষ এখন তাদের বোঝে। মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন। তাই তাঁরা সুবিধা করতে পারবেন না।
সালাউদ্দিন কাদেরের সর্বোচ্চ দণ্ড কার্যকর হওয়ার পর হুম্মাম চৌধুরী নিজেকে রাজনীতি থেকে অনেকটা সরিয়ে নিয়েছিলেন এবং তাকে তার রাজনৈতিক দলের নেতারা তেমন গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না।তবে গত এক বছর ধরে পুনরায় রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন হুম্মাম চৌধুরী। তবে তার রাজনীতির ধারা অনেকটাই তার বাবার মতো। তার বক্তব্যে তিনি যে স্লোগান দিয়েছিলেন সেটা নিয়েও বিএনপির মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।