দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের বিভিন্ন ভাষণে লক্ষ্য করা যায় তারা বলছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সাথে খেলা হবে তারা আওয়ামী লীগের সাথে ফাইনাল খেলতে চাই। এ বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়ে গণমাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছেন।
বিএনপি ফাইনালের খেলোয়াড় নয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছেন, তারা ফাইনাল খেলতে চায়। ফাইনাল খেলার আগে লিগের খেলা খেলতে গিয়ে তাদের পা ভেঙে যাবে। এটা কি তারা বোঝে না? তিনি বলেন, ‘আপনাকে কষ্ট করে ফাইনালে আসতে হবে না। আপনি ফাইনাল খেলার খেলোয়াড় নন।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে ‘সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিএনপিসহ দেশবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে ১৪ দলের সমাবেশ ও আলোচনা সভায় আমির হোসেন আমু এসব কথা বলেন।
বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায় দাবি করে আমু বলেন, ‘আপনি জনগণকে ভয় পান, গত দুই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে প্রমাণিত হয়েছে। জনগণ আপনাকে ভোট দেবে না, আপনি জানেন। তাই আপনার মুখোশ উন্মোচন করতে চান না। আপনি নির্বাচনকে ভয় পান কারণ আপনি জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হতে চান না- যে নির্বাচন এটি প্রমাণ করবে।’
বিএনপি সব সময়ই নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে চায় দাবি করে তিনি বলেন, আমরা জানি, তারা দূরে থাকছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি, আজ তাদের ভূত তথাকথিত রাজনৈতিক দল গঠন করে আবার এদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, অরাজনৈতিক সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা আজ যদি মনে করে, তারা আবার একই পথে যেতে পারে, তাহলে তারা ভুল। বড় ভুল করছেন।
আগামী নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও জাতীয় সরকারসহ বিএনপির দাবির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একদিন হয়তো তারা বলবে, ‘আমাদের সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না।’ তাদের সরকার থাকলে তারা নির্বাচন করবে। আর তাদের সরকারের আমলে নির্বাচনের ফলাফল আমরা জানি। নির্বাচনে কারচুপি, ভোট ছিনতাই সবকিছুই তাদের আমল থেকে।
আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোট নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা চায় না উল্লেখ করে আমু বলেন, ‘তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আমরা ঘরে বসে থাকব না। আমি জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করব। জনগণের জানমালের ক্ষতি হতে দেব না। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হতে দেব না। গণতান্ত্রিক পথে আমরা রাজপথে আন্দোলনে ছিলাম, প্রয়োজনে আন্দোলনে থাকব।
আমু আরও বলেন, “আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী বারবার তাদের কাজের সুযোগ দেওয়ার কথা বলছেন। বারবার বলছেন- ‘কেউ বাধা দেবে না। তারা প্রতিবাদ করুক। কিন্তু তারা থামতে চায়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে পেট্রোল ছুঁড়েছে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে- যাতে পুলিশ তাদের আক্রমণ করে। যাতে তারা বলতে পারে, পুলিশ আমাদের আক্রমণ করেছে।”
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সাধারণ সম্পাদক মো. ডেমোক্রেটিক পার্টির শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
বিএনপির আন্দোলনে নামলে পুলিশ এসে অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা করে তাদের ওপর এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র উর্ধ্বতন নেতারা। তারা বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকার বলেছে আমরা নির্বিঘ্নে যেকোনো জায়গায় আন্দোলন করতে পারব তবে ঘটনা হয়ে যাচ্ছে তার উল্টো। আমরা আন্দোলনে নামলে পুলিশ দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দাবি করছে পুলিশ পুলিশের কাজ করবে। আমরা আন্দোলনে কাউকে বাধা দেইনি। আপনারা আন্দোলনে যদি অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন সেতু পুলিশ তাদের বাধা দিবে এটাই স্বাভাবিক।