দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের নির্দেশে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক আবুল কাশেমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিএনপি নেতা আমানের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর আমানের স্ত্রী সাবেরা আমান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে গত ৩০ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ১৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। ওইদিন দুদকের আরেকটি মামলায় বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় আমান দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছর ও সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে ওই দম্পতি রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।
১৬ আগস্ট, ২০১০ হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে এবং তাদের খালাস দেয়। ২০১৪ সালের ২৬ মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে মামলার পুনঃশুনানির আদেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ মে পুনঃশুনানি শেষ হয়। পরে ৩০ মে হাইকোর্ট এই রায় দেন।
অপরদিকে, দুদকের উপ-পরিচালক শাহরিয়ার চৌধুরী সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের মার্চ মাসে মোহাম্মদপুর থানায় ৪ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার হিসাব ও আয়ের উৎস গোপনের অভিযোগে মামলা করেন। কমিশনের উপ-পরিচালক ওই বছরের ২৮ জুন মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন পরিচালক এসএমএম আখতার হামিদ ভূইয়া।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ট্রায়াল কোর্ট এই মামলায় টুকুকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে টুকু আপিল করলে ২০১১ সালের ১৫ জুন হাইকোর্ট তাকে খালাস দেন।
পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ খালাস বাতিল করে মামলার পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন। পুনঃশুনানি শেষে ৩০ মে টুকুর সাজা বহাল রাখেন আদালত। পরে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে তা সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যায়।