বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের আত্মসমর্পণকে কেন্দ্র করে ঢাকার জজ আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী ও সমর্থকরা। এ নিয়ে আদালত চত্বরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক আবুল কাশেমের আদালতে আমান আত্মসমর্পণ করে তার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করবেন বলে জানা গেছে।
আমানের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, আজ রোববার আমানউল্লাহ আমান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর আমানের স্ত্রী সাবেরা আমান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের একজন চেম্বার জজ তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ৭ আগস্ট নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চের ২৮১ পৃষ্ঠার প্রকাশিত রায়ে বিচারপতি মো. রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আমান দম্পতিকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
আমান দম্পতির আইনজীবী এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমানুল্লাহ আমানের সম্পদের কোনো তথ্য গোপন করেননি। দুদকের কাছে ঘোষণা করা সম্পদের ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। ফলে আমরা আশা করেছিলাম আমানুল্লাহ আমান খালাস পাবেন।
কারণ এই আদালতে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া খালাস পেয়েছেন। এ মামলার শুনানিতে মায়ার মামলার উদাহরণ দেখিয়েছি। কিন্তু আদালত বিচারিক আদালতের সাজা বহাল রাখেন। তিনি আরও বলেন, এ রায়ে ন্যায়বিচার না পাওয়ায় আমানুল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী ক্ষুব্ধ। তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। আর রায়ের কপি হাতে পেলে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন।
গত ৩০ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ১৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। ওইদিন দুদকের আরেকটি মামলায় বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় আমান দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১শে জুন আমানকে ১৩ বছর এবং সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে ওই দম্পতি রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ১৬ আগস্ট, ২০১০ হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে এবং তাদের খালাস দেয়। ২০১৪ সালের ২৬ মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে মামলার পুনঃশুনানির আদেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ মে পুনরায় শুনানি শেষ হয়। পরে ৩০ মে হাইকোর্ট এই রায় দেন।