নারায়নগন্জ সিটি কর্র্পোরেশন নির্বাচনের আর মাত্র ৮ দিন বাকি রয়েছে, আর এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকেরা প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। নাসিক নির্বাচনের একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হলেন বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার। তিনি এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। গত সপ্তাহে তিনি দল থেকে একটি বড় ধরনের দু:সংবাদ পেলেন। তিনি বিএনপি সভানেত্রী বেগম জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পদে ছিলেন এবার তাকে তার সেই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তাকে জেলা বিএনপির পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর দল থেকে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তিনি কিছুটা চাপে পড়েছেন। যেহেতু তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর দল থেকে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই মনে করা হচ্ছে, তাকে অব্যাহতি দেওয়ার কারন হলো নির্বাচনে অংশ নেওয়া। এখন বিএনপির প্রতি তৈমুরের কেমন মনোভাব বিরাজ করছে সেটাই অনেকের ভাবনায় উকি দিচ্ছে।
আমার শরীরটা কে’টে টুক’রো টুকরো করলেও যে আওয়াজটা আসবে সে আওয়াজটার নাম বিএনপি বলে জানিয়েছেন,দল থেকে সদ্য অব্যাহতি দেওয়া ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।
তিনি বলেন, স্থানীয় নেতাদের সাথে আমার সম্পর্ক, পানি কাটলে দুই টু’করো হবে কিন্তু তৈমূর আলম খন্দকারের সাথে বিএনপির সম্পর্ক কখনো দুই টুকরো হবে না। এখানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সব আছে। তারা যা করেছে বুঝে শুনে করেছে। বিএনপির ভোট নৌকা মার্কায় যাবে না বরং অন্য মার্কার ভোট আমার কাছে আসবে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে গেছে।
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বন্দরে জুমার নামাজ আদায়ের পর এ কথা বলেন তিনি।
তৈমূর বলেন, নারায়ণগঞ্জসহ গোটা বাংলাদেশে এখন নির্বাচন নেই। এই নির্বাচনটা হলো জনগণের সাথে আঠারো বছরের ব্যর্থতার লড়াই। এই নির্বাচনটা জনগণই করবে। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে শ্রমিক দিনমজুরসহ বিভিন্ন খেটে খাওয়া মানুষজন যারা আছেন তারাই এই নির্বাচন করছেন।
তিনি বলেন, আমি সাড়ে পাঁচ লাখ ভোটারেরই সমর্থন চাই। আওয়ামী লীগ কী ভোটার না, তারা কী এ শহরের নাগরিক না। এই প্রশ্নটা ঠিক না। প্রার্থী হিসেবে আমি সকলের কাছেই যাব। আমি সকলের ভোট কামনা করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি এর আগে দলের নির্দেশে বসে গেছি। সেই নির্বাচনটা আমি করতে পারিনি। এবার জনগণ সিটি করপোরেশন থেকে যেভাবে বঞ্চিত হয়েছে এই বঞ্চিত হওয়ার কারণে এবং সিটি করপোরেশন একটা সিন্ডিকেটে পরিত হয়েছে। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। মাত্র দুই তিনজন কনট্রাকটরের যে ঠিকাদারির সিন্ডিকেট এটা ভেঙে সকলের জন্য সুবিধা করতে চাই। সিটি করপোরেশন সবার। হোল্ডিং ট্যাক্স, পানির বিল এবং ট্রেড-লাইসেন্সসহ অন্যান্য ফি যে বাড়ানো হয়েছে এসব কমিয়ে এনে সিটি করপোরেশনকে গণমুখী সিটি করপোরেশন করতে হবে।
তিনি বলেন, কিছু পোস্টার ছেড়া হয়েছে। সরকারি দল আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকাসহ বড় বিলবোর্ড বানিয়েছে। তারা জনসভা করছে বাইরের এমপিদের নিয়ে। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন। আল্লাহ এবার জনতার বিজয় ঘটাবে বলেও জানান তৈমূর।
উল্লেখ্য, দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি তৈমুরের নিকট পাঠানো হয়েছে। রিজভী সেই সময় জানিয়েছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। “এটা দলীয় সিদ্ধান্ত।” তবে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে চিঠিতে কোনো কারণ উল্লেখ করা ছিল না। অবশ্য দলের কয়েকজন নেতা বলেন, তৈমুর আলম খন্দকার দলের সিদ্ধান্ত মানেননি। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো জাতীয় বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এতদসত্ত্বেও এবং দলের সিনিয়র নেতা হওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে পদ থেকে তার নাম আপাতত বাদ দেওয়া হয়েছে।”