সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি চট্টগ্রামে এবং ময়মনসিংহ দুটি সমাবেশ করেছে, যেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষ যোগদান করেছে, যেটা অনেকটা গুরুত্ব দেয়ার মত বিষয় অন্য দলগুলোর জন্য। সমাবেশে হতদরিদ্র ও কষ্টে থাকা সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছিলেন, যেটা ছিল উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়। তবে বিএনপির সমাবেশে যে পরিমাণ মানুষযোগ দিয়েছে তা দেখে আ.লীগের নেতারাও কিছুটা ভয় পেয়ে গিয়েছে। এবারে বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আমি লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কাদের বলেছেন, বিএনপির বিভাগীয় সভা ফ্লপ ছিল না, সেখানে প্রায় এক লাখের মতো জনসমাগম হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বিএনপির বিভাগীয় সভায় জনসমাবেশের সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না। গত কয়েক বছরে বিএনপি যেভাবে জনগণকে সংগঠিত করেছে, তার তুলনায় এটাকে ফ্লপ বলা ঠিক হবে বলে আমি মনে করি না। আমরা শুধু তাদের বলি শান্তিপূর্ণ থাকেন।
রোববার বিকেলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন বিভাগ ও সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সমাবেশে বিএনপির লোক দেখে আমরা ভয় পাই না। তারা যত লোক টার্গেট দেয় ততো লোক কি হবে? (বিএনপির জনসমাবেশে) অনেকেই অনেক কথা বলেছেন, ৩০, ৩৫ বা ৫০ হাজার লোক ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীকে ফোনে বলেছি, লাখের কাছে লোক হয়েছে। সত্য লুকিয়ে কোন লাভ নেই, আমি কেন সত্যকে আড়াল করবো? আওয়ামী লীগের অনেকেই এটা মানতে চাইবে না, তারা বলবে ৩০ হাজার, ২৫ হাজার হয়েছে।
কাদের বলেন, গত কয়েক বছরে বিএনপি যেভাবে জনগণকে সংগঠিত করেছে, তার তুলনায় এটাকে ফ্লপ বলা ঠিক হবে না বলে আমি মনে করি। আমরা শুধু তাদের শান্ত থাকতে বলি; ঢাকায় ১০ লাখ বসান, আমরাও ৩০ লাখ বসাতে পারি। কিন্তু যানজটের কী হবে সেটা ভাবতে হবে? কেউ কেউ অভাব ও কষ্টে থাকার কারণে বিএনপির সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি দেশে দৃশ্যমান কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। এখন তাদের আন্দোলন দেখে সরকারের মাথা ঠিক আছে। আমি বিএনপিকে বলব, চিন্তা করবেন না। আমরা ভয় পাচ্ছি যে মাথা খারাপ করে আবার পেট্রল বো’/মা নিয়ে নামবেন, আমরা তো সেই ভয় করছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি কাঁধ থেকে তত্ত্বাবধায়কের ভূত সরাতে পারছে না, আমরা ইভিএমের পক্ষে, কারণ এতে জালিয়াতির কোনো সম্ভবনা নেই। অথচ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ইভিএমের বিপক্ষে, আর বিরোধী দল পক্ষে। আর আমাদের ফখরুলরা ইভিএম চান না।
তিনি বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবে। সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেন চাইছে? বিএনপি কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত নামাতে পারছে না? সরকারি দল নির্বাচনে ইভিএম থাকার জন্য শতভাগ দাবি করছে। নির্বাচন কমিশন কতটা দেবে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, একটি সরকারের পতনের জন্য যে সকল বিষয়গুলো দরকার সে বিষয়গুলো বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে অনেকে। সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্য স্ফীতির মুখে পড়ে অনেকটা দুর্দশাগ্রস্ত জীবন পরিচালনা করছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ এবং সেইসাথে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরা। এ কারণে বিএনপির সমাবেশে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে।