পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, নির্বাচনে না গিয়ে জ্বালাও-পোড়াও ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।
বুধবার বিকালে সিলেট-১ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রাপ্ত হয়েও ড. মোমেনকে সমর্থন দিয়ে প্রার্থী না হওয়া নজরুল ইসলাম বাবুলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতমুক্ত, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, বাংলাদেশ সরকারও তাই চায়; তবে সংঘাতমুক্ত নির্বাচনের জন্য শুধু সরকারের নয়, সব দলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
বুধবার সকালে ব্যক্তিগত সফরে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ব্যক্তিগত সফর হওয়ায় গাড়িতে জাতীয় পতাকা ছিল না। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফর উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় যোগ দেন তিনি।
অনুষ্ঠান শেষে কৃতজ্ঞতা জানাতে সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম দক্ষিণ সুরমায় বাবুলের গোটাটিকর্শ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে যান। সেখানে পৌঁছে বাবুলের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বিনিময় হয়।
এএ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ কে আব্দুল মোমেন। শুরুতেই তিনি বলেন, সিলেট রাজনৈতিক সম্প্রীতির জায়গা। তার উদাহরণ নজরুল ইসলাম বাবুল। যিনি আমাকে শ্রদ্ধা জানাতে মনোনয়ন পেয়েও আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তাই আমার মনে হলো তার সাথে একবার দেখা করে তাকে ধন্যবাদ দেয়া দরকার। তিনি চাইলে সিলেট-১ আসনে আমার বিরুদ্ধে লড়তে পারতেন। আমিও তাকে স্বাগত জানাতাম; কিন্তু আমার জন্য সরে দাঁড়িয়েছেন, মনে হয়েছে তার অন্তরটা বিশাল। তার এই ছাড় দেওয়া সিলেটের সম্প্রীতির রাজনীতির একটি অনন্য উদাহরণ।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন এসেছে কি না জানতে চাইলে আবদুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধু। তারা আজ ৫২ বছর ধরে আমাদের বন্ধু। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সংঘাতমুক্ত নির্বাচনের জন্য সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সবার আন্তরিকতা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি আমরাও সংঘাতমুক্ত নির্বাচন চাই এবং অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন করে দেখাব, যুক্তরাষ্ট্র এ জন্য খুব খুশি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মনে হচ্ছে বিএনপির প্রতি অসন্তুষ্ট, কারণ তারা চেয়েছিল বিএনপি নির্বাচনে আসবে; কিন্তু জ্বালাও-পোড়াও করার ফলে তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এমন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কোনো দেশ বা মানুষ পছন্দ করে না। সে কারণেই বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
সর্বশেষ তিনি বলেন, আমরা খুব খুশি যে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে আছে এবং আমরাও একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন করে প্রমাণ করতে চাই।