পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে একের পর এক সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছে আ.লীগ সরকার বিরোধী ব্যক্তিরা। তবে পদ্মা সেতু নয় পদ্মা সেতু নিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিএনপি নেতারা। সম্প্রতিক সময়ে রুহুল কবির রিজভী পদ্মা সেতুতে জনগণের উপস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন ১০ লক্ষ মানুষ তো দূরে থাক সেখানে ১০ হাজার মানুষও সেখানে উপস্থিত হয়নি। এবারের এই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মো. হাছান মাহমুদ বলেন, “পদ্মা সেতু হওয়ায় সারাদেশের মানুষ খুশি, আনন্দিত ও গর্বিত, সেখানে বিএনপির বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তারা ঠিক সমপরিমাণ লজ্জিত, তেমনি পদ্মা সেতু বিএনপির পক্ষে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সোমবার (৪ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকরা বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজারের বেশি লোক উপস্থিত হয়নি’ এমন মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, “পদ্মা সেতু উদ্বোধনে মাত্র তিন হাজার লোককেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অন্য কেউ সেখানে যাওয়ার সুযোগ পায়নি এবং তাদের প্রত্যেককে সেখানে যেতে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগটির পরীক্ষার মাধ্যমে সেখানে যেতে হয়েছে।” আপনারা যারা সাংবাদিক, যারা অনুষ্ঠানটি কভার করেছেন তাদেরও তাই করতে হয়েছে। আর এ উপলক্ষে যে জনসভা হয়েছে, সেখানে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। আমি জানি না সেদিন পদ্মা সেতু দেখার সুযোগ হলে কত লোক সেখানে থাকতো, তবে আমার মনে হয় দেশের সব মানুষ সেখানে যেত।’
ডক্টর হাসান বলেন, “বিএনপির কিছু নেতার বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে, তাদের সত্যিই মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। তা না হলে তারা এমন কথা বলতেন না, বিশেষ করে রিজভী আহমেদ। তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এবং আমার মনে হয় তিনি এই কারনে এমন কথা বলছেন। অসুস্থ মানুষটি পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় তার আরও একটু চিকিৎসা দরকার বলে মনে হচ্ছে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি আদালত ঘেরাও কর্মসূচি দেবে, বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আদালত ঘেরাওয়ের বক্তব্য সরাসরি আদালতের জন্য হুমকি স্বরূপ। আমি জানি না আদালত সেটিকে কীভাবে বিবেচনা করবেন, তবে এটি সরাসরি আদালতকে হুমকি দেওয়ার শামিল।’
এর আগে তথ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ থেকে প্রকাশিত ছয়টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মকবুল হোসেন, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাহেনুর মিয়া, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক নিজামুল কবির।
মুজিববর্ষে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর পরিপূরক গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুভিত্তিক প্রবন্ধ ও কবিতার ওপর তথ্য বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু’ বইটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে মন্ত্রী বলেন, আমরা ভাগ্যবান যে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন করতে পেরেছি। এই প্রকাশনার মাধ্যমে মুজিব বর্ষের অনেক সংখ্যা সংরক্ষিত হবে। ‘
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের গবেষণা প্রকল্পের শীর্ষ পাঁচটি বইয়ের মধ্যে একটি: ‘চলচ্চিত্র সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার’, ‘স্টেট, আইডেনটিটি অ্যান্ড ডায়াসপোরা ইন তানভীর মোকাম্মেলস ফিল্মস’, ‘প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখা: পাঁচ দশকের বিবর্তন’, ‘বিদেশি চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপস্থাপন’ ও ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলচ্চিত্র সমালোচনার স্বরূপ’ বইগুলো থেকে অনেক কিছু জানার আছে বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তথ্য সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেন, তথ্যবহুল ও গবেষণাধর্মী এসব বই শুধু তথ্য মন্ত্রণালয় নয়, দেশের তথ্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনকেও সমৃদ্ধ করেছে। তিনি সবাইকে বই পড়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৫ শে জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করলেও তাদেরকে পদ্মা সেতুতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি নিরাপত্তাজনিত কারণে, এমনটি জানা গেছে। উদ্বোধনের দিন ৩ হাজার লোককে আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে জানান হাছান মাহমুদ। এদিকে বিএনপির দাবি, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন সেখানে ৫ থেকে ১০ হাজার মানুষও উপস্থিত হয়নি, কারন তারা পদ্মাসেতুর দূর্নীতির কারনে এটা মেনে নেয়নি।