আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বাংলাদেশের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল। তবে আওয়ামী লীগ হলো বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল। পর পর কয়েকবার দেশের ক্ষমতায় এসে দলটি রেকর্ড করেছে। আর এমনটি হয়েছে শুধুমাত্র মানুষের ভালোবাসার জন্যে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার এক বক্তব্যে বলেছেন বিএনপি দিনের বেলায় সিল মারত, রাতে দেয়া লাগবে কেন।
বিএনপি নেতারা নির্বাচন নিয়ে কীভাবে কথা বলেন, তাও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অভিযোগ করেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে এই দল অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে। আর ক্ষমতায় থাকাকালে দলীয় কর্মীরা দিনের বেলায় প্রকাশ্যে জোর করে সিল মেরে দিত।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের রাতে ভোট দেওয়া নিয়ে বিএনপির অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা এ মন্তব্য করেন, তাহলে রাতে ভোট দিতে হবে কেন?
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কৃষক লীগ আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে কার্যত যোগ দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হলে ২০১৪ সালের মতো ভোট বর্জনেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতাদের দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস নিয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিলেও তাদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগের রাতে বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় সিল মেরে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগ।
বিএনপির ভোট বয়কটের হুমকির জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের ক্ষমতায় আসা নির্বাচনের মাধ্যমে নয়। বেআইনিভাবে এবং সংবিধান লঙ্ঘন।
“এবং বিভিন্ন নির্বাচনে দলের নেতাকর্মীরা দিনের বেলায় প্রকাশ্যে জোর করে সিল মেরেছে। তাহলে রাতে ভোট দিতে হবে কেন? এছাড়া বিএনপি আমলে জনগণের ভোটাধিকার ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচন। কী নির্বাচন ছিল সেই নির্বাচন? কেউ কি সেখানে ভোট দিতে সক্ষম হয়েছে?
সারা বাংলাদেশে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সিল মেরে তারা (বিএনপি) প্রকাশ্যে সিল মেরেছে। এটা রাতের ভোট নয়, একে একে বাসে করে হবে, বিএনপির সন্ত্রাসীরা একে একে বুথে ঢুকবে, বাক্সে সিল মেরে ফিরে আসবে। আপনি যদি তা করতে না পারেন তবে এটি একটি সরাসরি ঘোষণা।
এসব প্রক্রিয়ায় মাগুরা নির্বাচন, মিরপুর নির্বাচন, ঢাকা-১০ নির্বাচন হলে ফালু নির্বাচন করেন- এগুলো মানুষ চোখে দেখে। মানুষ তখন ভোট দিতে পারেনি। বিএনপি আমলে তারা ভোটের অধিকারী ছিল না। নির্বাচন নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে, তারা কোন পথে কথা বলেন?’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসার বিষয়টিও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তারা নির্বাচনের ভিত্তিতে ক্ষমতায় আসে না, তারা অবৈধভাবে বা দেশ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসে।
যারা জাতির পিতাকে হত্যা করে জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলতে চেয়েছিল। যুদ্ধাপরাধী ও খুনিরা রাজত্ব করেছে, যাতে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ খেলতে না পারে।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “সামরিক শাসক তার গঠিত দলের হাতে অবশিষ্ট ক্ষমতা তুলে দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। তাদের এখন ভিন্ন নীতির কথা শুনতে হচ্ছে। কারা এই বাংলাদেশকে অস্ত্র চোরাচালানের জায়গা বানিয়েছে। সন্ত্রাসীদের দেশ। জঙ্গিবাদের দেশ, বাংলা সৃষ্টির দেশ, তারাই এখন নীতির কথা বলে!
প্রসঙ্গত, ভোট দিতে পারা হলো বাংলাদেশের নাগরিকদের মৈলিক অধিকার। সামনে আসছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো নানারকম কর্মসূচির মধ্যে ব্যস্ত রয়েছেন। দেশের জনগন চায় প্রত্যেকবারের মত এবারো নির্বাচন যেন সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য হয়।