বড় ধড়নের আন্দোলনকে সামনে রেখে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপির গণসমাবেশ শুরু করেছে। কিন্তু এই সমাবেশ নেতাকর্মীদের যোগদানে বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির গণসমাবেশে যাতে কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটে এমন পরিকল্পনায় পরিবহন মালিক সমিতি পরিবহন ধর্মঘট করে। ধারাবাহিক গনসমাবেশ মোতাবেক ফরিদপুরে বিএনপি বিভাগীয় গণসমাবেশের ঘোষণা করেছে আগামী ১২ ই নভেম্বর। এদিকে ফরিদপুর জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ১১ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ১২ নভেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত সকল ধরনের যান চলাচলে বিধি নিষেধ আরোপ করে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে কয়েকটি দাবি বাস্তবায়ন চেয়ে জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের প্যাডে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির স্বাক্ষরিত চিঠি ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। ১১ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ১২ নভেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৮ ঘণ্টা একটানা পরিবহন ধর্মঘট থাকবে।
সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের কাছে এ চিঠি হস্তান্তর করা হয়।
সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিবের সভাপতিত্বে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গত ২০২০ সালের ২৯ মে তারিখের সভার সিদ্ধান্ত নম্বর ১৩ মোতাবেক সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ২২টি জাতীয় মহাসড়কে, সব ধরনের অবৈধ থ্রি-হুইলার (নছিমন, করিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্রা, ব্যাটারি চালিত রিকশা, ইজিবাইক ও ভাড়া করা মোটরসাইকেল) নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে, যা দিন দিন বাড়ছে।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দক্ষিণবঙ্গে আঞ্চলিক ও দূরপাল্লার পরিবহন বেড়েছে। মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। এমতাবস্থায় সাধারণ যাত্রীদের নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্য ১০ নভেম্বরের মধ্যে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। অন্যথায়, ১১ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ১২ নভেম্বর শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ফরিদপুর জেলা বাস টার্মিনাল থেকে আঞ্চলিক বাস ও মিনিবাসসহ দূরপাল্লার সকল বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
ফরিদপুর মহেন্দ্র শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম বলেন, মহাসড়কের সব অংশে মাহেন্দ্র চালানো হয় না। প্রবেশের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ফিডার রোড ব্যবহার করা হয়।
ফরিদপুর পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি জুবায়ের জাকির বলেন, ১১ ও ১২ নভেম্বরের ধর্মঘটের সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই। গত মাসে মাদারীপুরে আমাদের দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন শ্রমিক নেতাদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের তারিখ মিলে গেলে আমাদের কী করার আছে?
এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিএনপির গণসমাবেশ জন সমুদ্রে পরিণত হচ্ছে। যেটা ক্ষমতাসীন দলের জন্য ভয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই জনসমুদ্র ঠেকাতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিচ্ছে। এদিকে আ.লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিবহন মালিক সমিতি ঠিক কি কারণে পরিবহন ধর্মঘট করছে, সেটা তাঁরাই ভালো জানে। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ সমাবেশ ঘিরে যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার কথা বলছে।