Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / “বিএনপির করা অপরাধ হলে সবাইকে একসঙ্গে মে”রে ফেলুন”

“বিএনপির করা অপরাধ হলে সবাইকে একসঙ্গে মে”রে ফেলুন”

বিএনপির রাজনীতি করা যদি অপরাধ হয়, তাহলে সবাইকে একসঙ্গে মেরে ফেলুন। একের পর এক য/ন্ত্রণা দিয়ে মারবেন না। সরকার গ্রেফতার-গু/ম-খু/ন করে আমার পরিবারকে ধ্বং/স করেছে। আমার দুই ভাইকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এক ভাইকে গুম করে একমাস ধরে গ্রেফতার রাখা হয়েছে।আমার ভগ্নিপতি বিএনপি করতেন।এক বছর আগে লক্ষ্মীপুরে র‌্যাব তাকে গু/লি করে হ/ত্যা করে।

ঢাকা মহানগর যুবদল নেতা লিয়ন হকের বোন আফরোজা পারভীন জেবা ও রাজীব হাসানের বোন আফরোজা পারভীন জেবার ঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সামনে গু/ম, খুন ও গ্রেফতারের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের স্বজনদের উদ্যোগে উচ্চকণ্ঠে এসব কথা বলেন।

শুধু জেবা নন, ২০১৩ সালে নিখোঁজ বিএনপি নেতা কাউছার হোসেনের স্ত্রী মিনা আক্তারও ‘রাজবন্দিদের স্বজন’ ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “আমার সন্তানের বয়স ১০ বছর এবং জন্মের পর থেকে বাবাকে দেখেনি। যখন সে বলে, ‘মা, এখন আমি বড় হয়েছি, এখন বাবাকে নিয়ে আসো। বাবার মুখ কি আর দেখতে পাবো না?’- তখন আমার বুক ফেটে যায়। আমি কি উত্তর দেব?”

সারাদেশ থেকে জেবা ও মিনা আক্তারের মতো শতাধিক বিএনপি নেতার পরিবারের স্বজনরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। আগত আত্মীয়স্বজন ও সন্তানদের আকুল আকুতি ও কান্নায় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। অনেককেই নীরবে চোখ মুছতে দেখা যায়। মানববন্ধন শেষে প্রধান বিচারপতির কাছে ‘ফরমায়েশি ও গায়েবী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও আটক বন্দীদের মুক্তির দাবিতে’ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

বিএনপি নেতাকর্মীদের স্বজনরা জানান, সারাদেশে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, গু/ম ও হ/ত্যা করছে। মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে দিনের পর দিন বিনা বিচারে কারাগারে আটকে রাখা হচ্ছে অনেককে। বিএনপি নেতাকে বাসায় না পাওয়া গেলে তার স্বজনদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। দুর্ব্যবহার ছাড়াও আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।

বিএনপি নেতা শেখ মনিরুজ্জামানের স্ত্রী শায়লা বেগম বলেন, রাত ২টার দিকে দরজা ভেঙে আমার স্বামীকে আটক করে পুলিশ। আমি আমার বৃদ্ধ ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে পুলিশের কাছে মিনতি করেছি। পুলিশ কিছুই শুনেনি। বাড়ি ভাংচুর, সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ছোট ছেলে সৈয়দ আরাফাত আবদুল্লাহ অন্তর বলেন, “সম্প্রতি আমার বাবার কিডনি অপারেশন করা হয়েছে। চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে মেডিক্যাল ম্যাট্রেস ও বালিশ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। তারা তাকে এসব ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না।” ১৫ দিন পর ফেরত দেওয়া হয়।এ অবস্থায় বাবা জামিন না পেলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়বেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের স্ত্রী ও বিএনপি নেত্রী শিরিন সুলতানা বলেন, ‘আমার স্বামী অসুস্থ। তাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হয়নি।

কারাগারে মা/রা যাওয়া বিএনপি নেতা আবুল বাশারের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে হ/ত্যা করা হয়েছে এবং আমার সন্তানকে এতিম করা হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে অমানবিক ও নিষ্ঠুর নি/র্যাতনের শিকার হওয়ায় তার মৃ/ত্যু হয়।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের স্ত্রী রহিমা জাহান মায়া বলেন, ‘আমার স্বামী দুই বছর ধরে জেল খাটছেন। সে কি অন্যায় করেছে? এটা কোন দেশে বসবাস করছে? যেখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিচারের জন্য আদালত গঠন করা হয়েছে। তাদের পরিবার ধ্বং/স হয়ে গেছে।

ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা আব্দুল হাই ভূঁইয়া বলেন, তিন ছেলে ও এক ছেলের স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। জেলের গ্রেফতার ও নির্মম নি/র্যাতন। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের স্বজনদের হ/য়রানি করছে পুলিশ।

বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর মেয়ে ব্যারিস্টার তাসনুভা তাবাসসুম রাত্রি বলেন, আমার বাবা ক্যান্সার রোগী। কেমোথেরাপি নিয়মিত দিতে হবে। তার চিকিৎসার যাবতীয় নথি জমা দেওয়ার পরও আদালত জামিন দেননি।

একাত্মতা প্রকাশ করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “ফিলিস্তিনের গাজায় যে মানবিক বিপর্যয় চলছে, দেশের অবস্থা সেরকমই। কেন এই অন্যায়, অমানবিক গ্রেপ্তার, নি/র্যাতন, হ/ত্যা?’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, মিথ্যা অভিযোগে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে বিএনপি নেতাদের নি/র্যাতন করা হচ্ছে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপি নেতাদের কারাগারে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও কিংস পার্টিতে যোগদানের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমরকে সরকার সৃষ্ট কিংসে যোগ দিতে চাপ দেন। কিন্তু শাহজাহান ওমর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এসব কুখ্যাত দলে যোগ দেবেন না।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পেশাজীবী নেতা নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, হাসনাত আবদুল কাইয়ুম, রাষ্ট্রপক্ষের নেতা শাহাদাত হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সংস্কার আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল মো. হক নূর, মুহাম্মদ রশিদ খান প্রমুখ।

About Babu

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *