আলোচিত পদ্মা সেতু তৈরী নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল দেশ ও দেশের বাহিরে। কিন্তু সব বাধা অতিক্রম করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সাহসি উদ্যোগে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় পদ্মা সেতু। এবার পদ্মা সেতুর ব্যবহার প্রসঙ্গে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্পর্কে যা বললেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগণের জন্য পদ্মা সেতু তৈরি করেছেন। তাই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সানন্দে পদ্মা সেতু ব্যবহার করতে পারবেন।
বুধবার রাজধানীর রমনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পদ্মা সেতুর অবদান’ শীর্ষক সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি এ সেমিনারের আয়োজন করে।
খালেদা জিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগ সরকার কি কখনো পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে এবং করলেও জোড়াতালি দিয়ে হবে, কেউ উঠবে না’- এমন কথা যারা বলেছিলেন তাঁদের এখন সেতুতে ওঠার অধিকার আছে কিনা’। আমরা বলছি, তাঁরা সানন্দে সেতুতে উঠুন। তবে আগের বক্তব্যের জন্য আমি জনগণের কাছে ক্ষমা চান।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ছিলেন বলেই পদ্মা সেতু হয়েছে। জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন সঠিক সাহস ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতু নয়।এটা বিশ্ববেনিয়াদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার এবং সবার ওপরে শেখ হাসিনার সক্ষমতার প্রতীক। বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ববেনিয়ারা বাংলাদেশে তাদের সুবিধাভোগীরা এবং বিএনপি-জামায়াতসহ আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পদ্মা সেতু নিয়ে সমালোচনা-ষড়যন্ত্র করেছিল। সেই ষ/ড়যন্ত্রের জাল ভেঙ্গে এবং হু/মকি উপেক্ষা করে শেখ হাসিনার পক্ষে এমন একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি এখন লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেছে। লজ্জা থেকে বাঁচাতে কি বলবে খুঁজে পাচ্ছেন না। কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য বিএনপিকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন। ১৯১০ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে নির্মিত হার্ডিঞ্জের ব্রিজটি আজ নির্মাণ করতে স্বর্ণমূল্য হিসেবে লাগত ১৭ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। হার্ডিঞ্জের সেতুর দৈর্ঘ্য ১.৮ কিমি। পদ্মা সেতু সাড়ে তিনগুণ বড় বা ৬.১৫ কিলোমিটার। সে হিসেবে পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হত ৫৮ হাজার ৬৩ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ একটি রেল সেতু মাত্র। পদ্মা সেতুর ওপরে চার লেনের রাস্তা, নিচে রেল। অর্থাৎ এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হওয়ার কথা ছিল ১ লাখ হাজার কোটি টাকা। তাই আজকে যারা পদ্মা সেতুর ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাদের বলবো- অহেতুক প্রশ্ন তুলবেন না। পদ্মা সেতু নির্মাণ করে শেখ হাসিনার অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন চুপ্পুর। আবুল বারকাত, বুয়েটের অধ্যাপক ড. খান মাহমুদ আমানত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু তৈরী নিয়ে অনেক সমালোচনা করেছিল বিএনপি। কিন্তু তাদের সব কথাকে ভুল প্রমান করে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাসুদ।