Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বিএনপির আরেক নাম বাংলাদেশ নালিশ পার্টি: ওবায়দুল কাদের

বিএনপির আরেক নাম বাংলাদেশ নালিশ পার্টি: ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল হলো আওয়ামী লীগ। তারা পরপর তিনবার জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলার ক্ষমতায় এসেছেন। আর এই দলের সাদারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি খুব দায়িত্ববান একজন নেতা। বর্তমানে ওবায়দুল কাদের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি ওবায়দুল কাদের তার এক বক্তব্যে জানতে চেয়েছেন বিএনপি পাকিস্তানপ্রেমী কেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের মানুষের ওপর গণপ্রাণনাশ চালিয়ে মা-বোনের সম্ভ্রম বিনষ্টকারী পাকিস্তানের প্রতি বিএনপির এত ভালোবাসা কেন জানতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে এক যৌথসভায় বিএনপির উদ্দেশে তিনি এ প্রশ্ন করেন।

বিএনপি এদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা জানে না যে শেখ হাসিনা তার পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো কখনো পিছু হটবেন না। শেখ হাসিনা হাল ছেড়ে দিতে জানেন না। সে হারলে বাংলাদেশ হারবে।

তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে প্রাণনাশ করে পাকিস্তান করতে চেয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিল; … তাদের দলের সেই সৈন্যরা, সেই দল বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানাতে চায়। মির্জা ফখরুল তার কথা গোপন রাখতে পারেননি। তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল, ‘পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম’।

ফখরুল সাহেব, কতো রবি জ্বলে রে, কেবা আখি মেলে রে। শুনেছি পাকিস্তান ফিরে যেতে চায়। এই স্বাধীনতা যুদ্ধের দেশে আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দেব না। এই শপথ আমাদের নেতারা নিয়েছেন।”

বিএনপির পাকিস্তান প্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আবার পাকিস্তানের নাম শুনলেই আওয়ামী লীগে আগুন জ্বলে। হ্যাঁ, গলগন্ড হয়। গাত্রদাহ তো হবেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমি স্বাধীন। আমার গাত্রদাহ হবে না?’

“যে পাকিস্তান আমার ত্রিশ লাখ মানুষকে মেরেছে, আমার মা বোনের সম্ভ্রম নষ্ট করেছে; কেন আপনি তাদের সাথে এতটা সংযুক্ত? কেন এত ভালবাসা? এই প্রাণনাশকান্ডের কথা ভুলে গেলেন? আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। লক্ষ লক্ষ বিহারী আমাদের উপর বোঝা চাপানো হয়েছে। তাদের নাগরিক, তারা ফিরিয়ে নেয়নি।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, ৫০ বছর পরও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গণপ্রাণনাশের জন্য পাকিস্তান ক্ষমা চায়নি। পাকিস্তান নিয়ে এত চিন্তা কেন? আপনি খুঁজে পেতে পারেন? তাহলে এটা সত্য যে, জিয়াউর রহমান একাত্তরে প্রতিশোধ নিতে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে প্রাণনশের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। এটা প্রমাণিত। আমি এই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।

ওবায়দুল কাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির সংঘর্ষ ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা তুলে ধরে বলেন, বিএনপি বলছে কুমিল্লা ও ঢাকায় হামলা হয়েছে… কিন্তু গতকাল বরিশাল ও চট্টগ্রামে কারা মারামারি করেছে? বরিশালে নিজেদের হামলা, চট্টগ্রামেও চেয়ার ছুড়ে মারে। শুধু একটা কাগজে দেখেছি। অনেকে তাদের নেতিবাচক খবরও ছাপান না। বলতে চাই না আমি কে জানি না। আমরা বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখছি।

এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, নেত্রীর নির্দেশের বাইরে কেউ এসব হামলার সঙ্গে জড়িত থাকলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা কাউকে রেহাই দেব না। এখানে কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা নেই।

“এখানে ওখানে দু-একটি পৃথক ঘটনার কারণে আজ সরকার ও আওয়ামী লীগের দুর্নাম। যারা এটা করবে তাদের বরদাশত করা হবে না। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা আমাদের অপবাদ দেবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই চলে যাই। বিভিন্ন দূতাবাসে যান। অভিযোগ করুন। বিএনপির আরেক নাম বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। দেশের মানুষের কাছে যতটা না করে, তার চেয়ে বেশি বিদেশিদের কাছে।”

এ সময় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, হাসান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বিএনপি বাংলাদেশের অন্যতম একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে সুপরিচিত। দলটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়াউর রহমান। দলটি গঠনের পর বেশ কয়েকবার জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলার ক্ষমতায় এসেছিলেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে দলটি ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীরা সভা ও সমাবেশ করে যাচ্ছে।

About Shafique Hasan

Check Also

‘আমি তোমাকে ছাড়বো না, শেখ হাসিনা কাউকে ছাড়ে না’: মুখ খুললেন সোহেল তাজ

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাস পর ২০০৯ সালে পদত্যাগ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *