বগুড়ার শাজাহানপুরে র্যাবের টহল গাড়ি দেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। দলটির নেতাকর্মীরা দাবি করেন, তাদের মিছিল দেখে র্যাবের টহল দলের সদস্যরা তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পালিয়ে যাওয়ার সময় যুবদল নেতার মৃত্যু হয়।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ফটকি ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
নিহত যুবদল নেতার নাম মো. ফোরকান আলী (৪২)। তিনি শাজাহানপুরের ঘাশিরা সুফিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক।
ফোরকান আলী উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের ঘাশিরা সুফিপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের বড় ছেলে। তিনি খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।
শাজাহানপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক শাহীন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, অবরোধ সফল করতে আমরা ফটকি ব্রিজ এলাকায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি। অনুষ্ঠান শেষে ফেরার সময় র্যাব আমাদের ওপর হামলা চালায়। নেতাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ফোরকান পড়ে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (এসএইচজেএমইসি) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানতে চাইলে র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মীর মুনির হোসেন বলেন, এ ঘটনার কোনো সত্যতা নেই। ফোরকান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। যেখানে তারা মিছিল করেছে সেখানে পুলিশ বা র্যাবের কেউ যায়নি। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার বিন্দুমাত্র কোনো বিষয় ছিল না। তবে বড় জোড় র্যাব-পুলিশের টহল গাড়ি থাকতে পারে। ফোরকানের ঘটনাকে রাজনৈতিক ফ্লেভার দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরে জানতে পারি ফোরকান হার্টের রোগী। মোটরসাইকেলে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। এমনটাই বলছেন তার পরিবারের সদস্যরা। আমরা নিয়ম মেনে কাজ করছি।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে এটা সত্য। কিন্তু পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে গুজব রয়েছে। এ গুজব ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমি নিহতের বাড়িতে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারি। মৃত ফোরকান তার বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই ভাই রেখে গেছেন। তারা পুলিশকে জানিয়েছে, ফোরকান শাহজাহানপুরে টিএমএসএস পেপার বোর্ডে কাজ করত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। রোববার সকালে মোটরসাইকেলে দুপুরের খাবার নিয়ে কাজে যাওয়ার পথে সাজাপুর ফটকি ব্রিজ এলাকায় দুর্ঘটনাক্রমে নিচে পড়ে যান। ফোরকানের মেয়ের বাড়ি সাজাপুর এলাকায়। পুত্রবধূ এ খবর পেয়ে তাকে শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক যুবনেতা ফোরকানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ফোরকানের পরিবার কোনো অভিযোগ দেয়নি। পুলিশ বা বিজিবির ধাওয়া খেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে গুজব।