বিএনপিকে পায়ে ধরে নির্বাচনে আনবো না,সেই ক্ষমতা দেয়া হয়নি:সাফ জানিয়ে দিলেন ইসি

বাংলাদেশে আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। আর এই লক্ষ্যে এখন থেকে কাজ করে যাচ্ছে দেশের নির্বাচন কমিশন, তবে এবারও হয়তো নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। আর এ নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন দেশের নতুন ইসি।

দেশের রাজনীতিতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে পায়ে ধরে নির্বাচনে আনবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি)। আলমগীর। তবে তফসিল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য ইসির দরজা খোলা থাকবে বলে জানান তিনি।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর এ কথা বলেন।

এ সময় ইসি আলমগীর সংবিধানে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতার কথা উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচন পরিচালনা, নির্বাচন সুষ্ঠু করার এবং গ্রহণ করার ক্ষমতা সংবিধান আমাদের দিয়েছে। যারা নির্বাচনে আসবে না তাদের প্রলুব্ধ, প্ররোচিত, রাজি করানো এবং আনার ক্ষমতা কি সংবিধান আমাদের দিয়েছে? সংবিধানে কি কোথাও বলা আছে? তাহলে আমরা কেন এটা আনব? যদি থাকত, আমি করতাম।

তিনি বলেন, ‘যারা বলছেন যে আমরা নির্বাচন করব না, নির্বাচনে আসব না; তারা কী বলছেন না বলছেন তা তো আলোচ্যসূচিতে রাখার সুযোগ নেই। আমাদের আলোচ্যসূচিতে রাখতে হবে যারা আলোচনায় এসেছেন তাদের বক্তব্য। কাজেই তারা বাইরে কী বলছেন, তার ভিত্তিতে কি আলোচনা করার সুযোগ আছে?’

আলমগীর বলেন, যত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে, আমরা চাই তারা সবাই নির্বাচনে আসুক। আমরা খুশি হব যদি সবাই আসে খুব কৃতজ্ঞ থাকব। এটি একটি খুব ভাল কাজ হবে. এখন কেউ যদি বলে আমরা নির্বাচনে যাব না, তাহলে নির্বাচন ঠেকানোর ক্ষমতা আমাদের দেওয়া হয়নি। এখন যারা নির্বাচনে আসবে, তাদের কথা ভাবার দায়িত্ব কমিশনের। তারা যা বলে তা গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কেউ যদি বলেন, আমি নির্বাচনে যাব না; তখন উনি কী চাচ্ছেন নির্বাচনে সেটা তো গুরুত্বে আনার সুযোগ নেই।’

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। তবে কত আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। সক্ষমতা ও যৌক্তিকতা বিবেচনা করে চলতি মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। যে সব আসনে ইভিএমে ভোট হবে, সেখানে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে।

সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন- বিএনপি যদি আলোচনায় এসে বলে নির্বাচনে যাবে, তাহলে ইভিএম চায় না। তাহলে কি করবেন? জবাবে কমিশনার বলেন, ‘তাহলে অবশ্যই আমলে নেব। কারণ তারা যখন এসে বলে যে আমরা নির্বাচনে যাব, আমরা এটা চাই। তারপর আমরা এটা নেব। কারণ তারা একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। তাদের চাওয়া আমলে না নেওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু তারা সংলাপে আসেননি, তাই রেজুলেশনে তাদের আলোচনা করতে পারছি না।

তবে ইসি আলমগীর আরও বলেন, আমন্ত্রণের সঙ্গে আমাদের দরজার কোনো সম্পর্ক নেই, তফসিল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের দরজা খোলা থাকবে।

ইসির ব্যবহৃত ইভিএমে কারচুপির সুযোগ নেই দাবি করে আলমগীর বলেন, ‘ইভিএম এ ভোট চুরি হতে পারে। কিন্তু আমাদের যে ইভিএম আছে, তাতে চুরি হতে পারে, তার প্রমাণ দেন। সেই চ্যালেঞ্জ বেশ কয়েকবার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আজ পর্যন্ত কেউ প্রমাণ করতে পারেনি যে আপনার ইভিএম এ ভোট চুরি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘ইভিএমে কারচুপি করা যায়- সে বিষয়ে কয়েকবার ওপেন চ্যালেঞ্জ দিলাম। লিখিতভাবে বললাম। আমাদের ওই চ্যালেঞ্জ এখনো ওপেন আছে। এটা বন্ধ করিনি। আপনারা শুধু বাইরে থেকে বলেন এটা এই-ওই, তার ভিত্তিতে তো একটি দেশ বা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। একটি প্রতিষ্ঠান চলে তার প্রমাণের ভিত্তিতে, তার দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে।’

এ দিকে যে কোন মুল্যে নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সব ধরনের কর্মকান্ড চালাতে বদ্ধ পরিকর বর্তমান ইসি। তারা যে কোন মুল্যে চাইছেন নির্বাচনকে স্বচ্ছ করতে। আর এই লক্ষ্যে নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতাও চেয়েছে তারা।