Sunday , November 10 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রায় ২০১৬ সাল ( Year ) থেকেই থানা ও ওয়ার্ড কমিটি শুধুমাত্র সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সমন্বয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। মহানগরে নতুন নেতৃত্ব এলেও সেগুলো পূর্ণাঙ্গ হয়নি। আর এতেই হতাশা তৈরি হয়েছে মহানগরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। অনেকেই দলীয় কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে রাজধানীতে দলের সাংগঠনিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে দূরত্বও বাড়ছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ( South Awami League ) সাংগঠনিক কার্যক্রম কিছুটা মন্থর হয়েছে। থানা-ওয়ার্ড কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। প্রায় সব অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানেই একই অবস্থা। মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ অধিকাংশ অঙ্গসংগঠনের কমিটির মেয়াদ নেই। উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগের ( Juba League ) শীর্ষ চার পদের তিনজনই দায়িত্বে রয়েছেন। সম্মেলনের আড়াই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগ। তিন বছরের কমিটি আড়াই বছর কাটিয়েছে চার নেতা। রাজধানীর আওতাধীন স্বেচ্ছাসেবক লীগের অধিকাংশ থানা-ওয়ার্ড কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। ফলে ঢাকার ( Dhaka ) সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে এখন শঙ্কিত আওয়ামী লীগ।

এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত আবারও আন্দোলনের নামে নাশকতা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে রাজধানীতে সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য দলীয় সূত্রে জানা গেছে। মহানগর আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এই প্রথম ঢাকায় ‘সাংগঠনিক দুর্বলতা’ কাটাতে ইউনিট পর্যায়ে সম্মেলন হচ্ছে। এর আগে ইউনিট পর্যায়ের দায়িত্ব ওয়ার্ডের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। ইউনিট সম্মেলন এখন শেষ পর্যায়ে। আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে ঢাকা মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড ইউনিট সাজানোর টার্গেট নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, ঢাকা বাংলাদেশের প্রাণ। ঢাকায় সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল হলে সারা দেশে শক্তিশালী হয়ে লাভ নেই। তাই ঢাকায় দ্রুত সংগঠনের আয়োজন করা হবে। বর্তমানে ইউনিট কমিটি গঠন করা হচ্ছে। শিগগিরই তা শেষ করে থানা-ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলন দেওয়া হবে। আগামী আগস্টের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের থানা ও ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলন শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। আর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আগামী সেপ্টেম্বরে থানা সম্মেলন করতে চায়। ঢাকা মহানগরীতে প্রায় দেড় শতাধিক ওয়ার্ড রয়েছে। প্রায় ৫৪টি থানা রয়েছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়ছে। নেতাকর্মীদের ওপর প্রাণনাশ ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উত্তরের সভাপতি হয়েছেন শেখ বজলুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এস এম মান্নান কচি। দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। চার নেতা গত রোববার গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে আরও সুসংগঠিত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে হবে, এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে অতীতের মতো আন্দোলনের নামে আগুন, নৈরাজ্য বা বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। যে কোনো সহিংসতা সৃষ্টির অপচেষ্টা যাতে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা যায় সেজন্য মহানগরের নেতাদের চোখ-কান খোলা রাখা দরকার। বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক পরিস্থিতি ও কোন্দল নিয়ে কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল আয়োজন করে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। জামায়াতসহ কোনো বিরোধী মতাদর্শী ও বিতর্কিত ব্যক্তি যাতে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখবেন, খারাপ গরুর চেয়ে খালি গোয়াল ভালো। উল্লেখ্য, আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। সাধারণত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে ঢাকা মহানগর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, মহানগরের নেতৃত্ব ঠিক না হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফসল কাটা কঠিন হবে। বিএনপি-জামায়াত শুধু হৈচৈ শুরু করেছে। জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের শোডাউন দিচ্ছেন তারা। বিপরীতে মহানগর আওয়ামী লীগ বা তার জোটের কেউই শক্তি প্রদর্শন করতে পারছে না।

উল্লেখ্য, যেকোনো রাজনৈতিক দলের জন্য রাজধানী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলো যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে রাজধানীর নেতা-কর্মীদের শক্তির ওপর নির্ভরশীল। দীর্ঘদিন ধরে ক// রোনায় কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তৃণমূলের ভিত দুর্বল হয়ে পরেছে। সব বিভাগের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা বিরাজ করছে। তবে নেতাকর্মীরা বলছেন, সবচেয়ে নাজুক অবস্থা ঢাকা মহানগরীর।

 

 

About Syful Islam

Check Also

জেলে থেকে শত কোটি টাকার মালিক আলমগীর

লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি এবং সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আলমগীর হোসেন ও তার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *