বলিউড সুপার স্টার অভিনেতা ও তিন খানের একজন আমির খান। যিনি একজন সফল অভিনেতার পাশাপাশি প্রযোজক ও চিত্রনাট্য লেখক হিসেবেও বেশ খ্যাতো অর্জন করেছেন। বয়স ৫৬ হলেও এখনো লাখ লাখ তরুণীর ক্রাস এই অভিনেতা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একাধিক ব্যবসায় সফল সিনেমা উপহার দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন কোটি কোটি দর্শকের মনে।
পুরো বিশ্ব আমিরের সিনেমার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে কারণ তিনি নিজের জন্য একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন এবং নিশ্চিত করেন যে তার সিনেমাগুলো যেনো শুধুমাত্র বলিউডের গতানুগতিক রোমান্সের গল্প না হয়ে বরং একটি ভিন্নধর্মী সিনেমা হয়।
অভিনয় ও বিনোদনের প্রতি তার কতোটা আবেগ রয়েছে সেটি তার নির্বাচন করা চরিত্রগুলো দেখলেই প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘লাগান’, ‘থ্রি ইডিয়েটস’, ‘দঙ্গল’, ‘ফনাহ’র মতো অসংখ্য ব্লকবাস্টার।
এদিকে, বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নামি-দামি এমন বহু তারকা রয়েছেন যাদের অভিনয় ক্যারিয়ার শুরুর আগে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আমির খানও তার ব্যতিক্রম ছিলো না।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডার বেনেট ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন আমির খান। সেখানেই শিক্ষার্থীদের সামনে নিজের ক্যারিয়ারের শুরুর সংগ্রামের কথাগুলো তুলে ধরেছিলেন বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট।
৫৬ বছর বয়সী এই তারকা জানান, তার ক্যারিয়ারের এমন কিছু সময় ছিলো যখন তিনি প্রতিদিন ব্যর্থ হয়ে বাড়ি ফিরতেন এবং রাতভর কান্নাকাটি করতেন এটি ভেবে যে, তিনি একজন ব্যর্থ মানুষ।
কিন্ত তিনি কেনো নিজেকে ব্যর্থ মনে করতেন? যেখানে তার অভিনীত প্রথম ছবি ‘কায়ামাত সে কায়ামাত তাক’ দারুণ সফলতা অর্জন করেছিলো। ব্লকবাস্টার এই ছবিটির পর আরও বেশ কয়েকটি ছবির কাজ পেয়েছিলেন আমির। কিন্তু তিনি শিগগিরই বুঝতে পেরেছিলেন যে কোনও সিনেমারই তেমন ভূমিকা ছিল না এবং সিনেমাগুলো দ্রুত বক্স অফিসে ব্যর্থ হতে শুরু করে। তাছাড়া তিনি ইতিমধ্যেই স্বল্প পরিচিত পরিচালকদের একাধিক সিনেমা চুক্তিবদ্ধ হয়ে গেয়েছিলেন এবং তা থেকে তার পিছনে ফিরে যাওয়ার কোনও উপায় ছিল না।
সেসময় তিনি ‘কায়ামাত সে কায়ামাত তাক’কে ‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার’ তকমা দিয়েছিলেন এবং ধরেই নিয়েছিলেন তিনি চোরাবালিতে আটকে গেছেন। আমিরের কোনো আশা ছিল না যে তিনি যে চোরাবালির মধ্যে আটকা পড়েছেন তা থেকে বেরিয়ে আসবেন।
যাইহোক, এসব অভিজ্ঞতার পর তিনি নিজের কাছে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- যে এখন তিনি শুধুমাত্র মূল্যবান ভূমিকা রয়েছে এমন স্ক্রিপ্টগুলোতে কাজ করবেন এবং সম্মতি প্রকাশের আগে একটি স্ক্রিপ্ট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়বেন।
এই ঘটনার পর থেকেই চরিত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতা অবলম্বন করেন আমির খান। বছরে একটির বেশি ছবি করেন না। যার ফলে তাকে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির মিস্টার পারফেকশনিস্টের তকমা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে ‘ইয়াদোঁ কি বারাত’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন আমির খান। তবে এরপর ‘হোলি’ সিনেমার মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক অভিনেতা বলিউডে প্রথমবারের মতো পা রাখেন তিনি। বর্তমানে তার ঝুলিতে রয়েছে একাধিক ব্যবসায় সফল সিনেমা।