রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বেশ কয়েক সপ্তাহ যাবৎ চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি সভানেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অবস্থা মাঝে মাঝে স্থিতিশীল থাকলেও কয়েকদিন পর পর তার শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যায়, এমনটাই জানিয়েছেন তার চিকিৎসকেরা। গত দুই দিন ধরে মাঝে মাঝেই বেগম জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে যে সময়ই রক্তক্ষরন হওয়ার উপক্রম হয়, সেই সময়েই তাঁকে স্যালাইন এবং সেই সাথে ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা করছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো নেই। চলমান এই ধরনের চিকিৎসায় তার সুস্থতার কোনো ধরনের সম্ভাবনা নেই। উল্টো যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশ’ঙ্কা করছেন তারা।
চিকিৎসকরা বলেন, খালেদা জিয়ার শরীরের অনেকগুলো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, কিন্তু কোনোটারই ফলাফল ইতিবাচক আসেনি। এখন প্রতিদিনই দুই বেলায় মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বৈঠকে বসছেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পর্যালোচনা করে প্রতিদিনই ওষুধ দিচ্ছেন তারা। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনও এ কথা স্বীকার করেছেন। দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে তিনি আরও জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের শরীরের বিভিন্ন প্যারামিটারগুলো নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে, আবার সেগুলো ওপরে উঠানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
কয়েক দিন ধরেই কমে যাচ্ছে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। র’ক্ত কিংবা ওষুধ দিয়ে তার মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত রক্তও আর দেওয়া যাচ্ছে না তাকে। এতে পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান চিকিৎসায় তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার কোনো সুযোগ নেই। বরং তাঁর শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে তাঁর স্বাস্থ্য ঝুঁকিটা ততই বেড়ে যাচ্ছে। এখন তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এই সরকার তাঁকে বিদেশে যেতে অনুমতি দিচ্ছে না।
গেল ১৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। ডা. শাহাবুদ্দিন আহমেদ তালুকদার যিনি ঐ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক তার নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করার মাধ্যমে তার চিকিৎসা চলছে। তবে তার উন্নত চিকিৎসা দরকার বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকেরা।
খবর বাংলাদেশ প্রতিদিনের।