কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি গত কয়েকদিন আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহারকে নিজ এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। কিন্তু চিঠি পাওয়ার পরও নিজ এলাকা ত্যাগ না করায় বেশ আলোচনায় জড়িয়ে পড়েছেন বাহার।
আর এদিকে এবার সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার কোনো আইন ভঙ্গ করেননি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সোমবার (২০ জুন) নির্বাচন ভবনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কিউসিক) নির্বাচন-পরবর্তী সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
কুসিক নির্বাচনে প্রচারণার অভিযোগ উঠলে স্থানীয় সংসদ সদস্য আকম বাহাউদ্দিন বাহারকে নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় ইসি। কিন্তু তিনি এলাকা ত্যাগ না করলেও চিঠিটি ইসির এখতিয়ারের বাইরে উল্লেখ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ইসি।
সিইসি বলেন, “বাহাউদ্দিন সাহেব কোনো আইন ভঙ্গ করেননি। নিয়ম ভাঙেননি। তিনি গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ ছিল। তাই আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম। অনুরোধ করলে তিনি রাখতে পারেন বা নাও রাখতে পারেন। নীতভাবে অনুরোধ আর নির্দেশ এক করে দেখার সুযোগ নেই। তবে তিনি চলে গেলে ভাল হত।’
তিনি বলেন, আমরা প্রায় শুনেছি যে নির্বাচন কমিশন তাকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচিত সংসদ সদস্যকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয়নি। আমরা তাকে জনসাধারণের প্রচারণায় অংশ নিতে দেখিনি। তবে কেউ কেউ বলছেন তিনি কৌশলে অংশ নিয়েছিলেন। আমাদের একটা প্রত্যাশা ছিল যে তাকে অনুরোধ করলে আর কোনো কথা হবে না। ‘
সিইসি বলেন, “নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী তিনি (বাহার) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারি সুবিধাভোগী, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সংসদ সদস্যকে কেন, কোনো সাধারণ কোনো আদেশ দিতে পারে না। আমরাও বাহাউদ্দিনকে এলাকা ত্যাগ করার কোনো আদেশ করিনি। তাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করেছিলাম, সেই চিঠি আছে। কিন্তু চারদিকে ছড়িয়ে গেলো আদেশ করার পরও তিনি প্রতিপালন করতে পারলেন না। এ কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী গিয়েছিলেন, তাকে এক ঘণ্টার মধ্যে এলাকা ত্যাগ করাতে পেরেছিলাম। হয়তো তিনি পেরেছেন, সেটা ভিন্ন কথা। সেক্ষেত্রে সেই মন্ত্রী ছিলেন বহিরাগত। আর বাহাউদ্দিনের ওটা স্থায়ী ঠিকানা। একজন মানুষ তার বাড়িতে থাকতে পারবে না তা তো নয়। আমরা একটু বিনীতভাবে অনুরোধ করেছিলাম, হয়ত উনি ডিস্টার্ব করছেন বা কৌশলে প্রচারণা করছেন। সেজন্য তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল। আমরা আইন কানুন দেখে চিঠি দিয়েছিলাম। এজন্য ব্যক্তিকে তার এলাকা থেকে বহিষ্কার করার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই।’
এদিকে সংসদ সদস্য বাহারকে চিঠি দিয়ে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পরও বাহার এলাকা না ছাড়ায় অসহায়ত্ব প্রকাশ পায় সিইসির। আর এ নিয়ে রীতিমতো সারাদেশজুড়ে চলছে নানা শোরগোল। অনেকেই সিইসির পদত্যাগের দাবি করেছেন।