বাংলাদেশের বিনোদন জগতের জনপ্রিয় মডেল অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা বিয়ে করেছেন কোলকাতার বিনোদন জগতের খ্যাতিমান পরিচালক সৃজিৎ মুখার্জীকে, এরপরই তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন দুই বাংলায়। শুধুমাত্র পর্দায় নয়, পর্দার বাইরেও বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত থেকে তিনি নজর কাড়েন সবার। তিনি মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরব হয়ে ওঠেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এবার নারী স্বাধীনতা বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন এই অভিনেত্রী। তিনি কীভাবে পুরুষদের শাসন করেও সংসারে মানিয়ে চলতে হয় সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় একের পর এক প্রচলিত কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন মিথিলা। সেসব কথা আজও সব অর্থে মেয়েদের ক্ষেত্রে সত্যি। মিথিলা বলেন, এখনও আমাদের সমাজে মেয়েরা মনে করেন ‘মেয়েদের মানিয়ে নিতেই হয়’ কিংবা ‘রাত করে বাসায় ফিরলে মার তো খাবেই’ অথবা ‘স্বামীর রাগই তো ভালোবাসা।’ ‘কী, গায়ে হাত তোলে? একটা থাপ্পড়ে কী হয়! টাকা-পয়সা তো দেয়’।
মিথিলা বোঝাতে চেয়েছেন ওই কথাগুলো যেন মেয়েদের জীবনগাঁথা। শহর থেকে শহরতলি এমনকি দেশ বা বিদেশ, এ কথাগুলোই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে মেয়েদের শেখানো হয়। একুশ শতকেও তার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেন, “ছোটবেলা থেকেই আমরা কিছু কথা শুনে আসছি যেগুলো পারিবারিক নির্যাতনকে আমাদের সমাজে স্বাভাবিক করেছে। যেমন, মেয়েদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, বাসর রাতে বিড়াল মারো, লাল শাড়িতে যাবে সাদা শাড়িতে আসবে।”
জন্ম থেকে শুনতে শুনতে কথাগুলো যেন ‘অভ্যাস’ হয়ে দাঁড়িয়েছে নারী জীবনে। হাজার নিয়ম, নীতির বেড়াজালে বন্দি নারী যখনই ছটফটিয়ে ওঠে, নতুন কিছু শুনতে চায়;, এই কথাগুলো যেন আরও বেশি করে শোনানো হয় তাকে। যাতে নিয়ম-বিরুদ্ধ, নীতি-বিরুদ্ধ কোনো কাজ, কোনো পদক্ষেপ সে না নিয়ে ফেলে। স্বামী বা পুরুষ সঙ্গীর রাগ বড্ড বেশি, তাই সে রেগে গিয়ে হাত তোলে। তাই স্ত্রীকে বা সেই মেয়েকেই সাবধানে থাকতে হবে, সেই পুরুষ যাতে রেগে না যান।
একুশ শতকেও কী এই ধারা বদলাবে না? অবশ্যই বদলাবে। তারই ডাক দিয়েছেন মিথিলা। যুগ যুগ ধরে বলে আসা কথাগুলোর সঙ্গেই ছিল তার জো’রালো প্রতিবাদ।
মিথিলা বলেন, এসব কথা আমাদের সমাজে পারিবারিক নির্যাতনকে আরও যেন স্বাভাবিক করে তুলছে। আমি এ ধরনের সব কথা বর্জন করছি। একইভাবে তিনি সব মেয়ে এবং সমাজের সবাইকে গার্হস্থ্য হিংসার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা তার এই সোচ্চারের মাধ্যে প্রথম প্রতিবাদী রূপ দেখাননি। এর আগেও তিনি নারীদের নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে অশ্লীল কটাক্ষ করা হয় সেটার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মিথিলা সৃজিতকে বিয়ে করার পর থেকে বেশিরভাগ সময় কোলকাতায় সময় কাটান। মাঝে মাঝে তিনি সৃজিতের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্যামেরার সামনে আসেন। তবে তিনি বর্তমান সময়ে অভিনয় নিয়েও ব্যস্ত রয়েছেন।