বিয়ে দুটি মন ও দুটি পরিবারকে একত্রিত করে। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় বর কনে নিজেদের মন একত্রিত করতে পারেনি বলে অভিযোগ কনের পরিবারের। ছেলে সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই না করেই মেয়েকে বিয়ে দেন তারা। এই পর্যন্ত ঠিক থাকলেও এপর্যায়ে কনের সাথে ঘটে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। বিয়ের মাত্র ১৯ দিনের মাথায় না ফেরার দেশে চলে যায় নববধূ।
ঘটনাটি ঘটেছে, চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কমলার দীঘি এলাকার গৃহবধূ জাহেদা আফরিন ওরফে তাইরিনের। তিনি ওই এলাকার মো. ইসমাইলের স্ত্রী।
শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে তার বাবার বাড়ি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের শান্তিরহাট সাপলেজা পাড়ায় দাফন করা হয়।
এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কমলার দীঘি এলাকায় স্বামীর বাড়ি থেকে তার লা/ শ উদ্ধার করে পুলিশ।
তাইরিন সাপলেজা পাড়ার প্রবাসী। ইউসুফের মেয়ে। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাইরিন পোমরা জামেউল উলূম মাদ্রাসা থেকে ফাজিল (ডিগ্রি) শেষে রাঙ্গুনিয়া আলমশাহ পাড়া কামিল মাদ্রাসায় কামিল (এমএ) হাদিস বিভাগে ভর্তি হন।
এদিকে, তাইরিনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার মৃ/ ত্যুকে আ/ ত্মহত্যা বলে জানিয়েছেন। তবে তাইরিনের পরিবার এটিকে পরিকল্পিত হ/ ত্যা বলে দাবি করেছে। তাকে নি/ র্যাতন করে হ/ ত্যার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই মেয়ের প্রয়ানের পেছনে রয়েছে অনেক বড় একটি ঘটনা। তাইরিনের ছোট ভাই। ইব্রাহিম বোনের স্বামী ইসমাইলকে অভিযুক্ত করে বলেন, সে আমার বোনকে হ/ ত্যা করেছে। বসরাতে আমার বোনের উপর অ/ত্যাচার করেছে। ওই রাতেই তিনি শা/ রীরিকভাবে আহত হন। পরদিন সকালে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শরীরে তিনটি সেলাই লাগে। এতে বোঝা যায় আমার বোন কতটা কষ্টে ছিল।
তাইরিনের বড় বোন রাশেদা আফরিন বলেন, “আমার বোনকে মোবাইল ফোনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি বাড়িতে আসতেও দেওয়া হয়নি। আসার কথা বললে নানা অজুহাত দেখাতেন। তৈরিনের স্বামী ইসমাইল কখনো আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিল।আমি আমার বোনকে কি ধরনের লোকের সাথে বিয়ে করেছি?
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়ির কেউ তাইরিনকে দেখলে তাদের বাড়ির কেউ বোনের সঙ্গে থাকত। একা কথা বলার সুযোগ দিতেন না। বোনের স্বামী নেশাগ্রস্ত, মাতাল।
এদিকে তাইরিনের স্বামী মো. ইসমাইল বলেন, “আমার যা বলার আছে, রাউজান থানায় বলেছি। ঘটনার দিন বলেছি, কতবার বলব? তাইরিন ফ্যানের সঙ্গে দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কেন সে তা জানি না। আত্মহত্যা করেছে আমাদের কিছুই হয়নি।’
তাইরিনের কাজিন। ফয়সাল বলেন, “তাইরিনের বাবা বিদেশ থেকে রাতে দেশে এলে তাকে দাফন করা হয়।”
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, ময়নাতদন্ত শেষে গৃহবধূ তাইরিনকে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অপ/ মৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কমলার দিঘী এলাকায় গণির বাড়ি মো. জাহেদা আফরিনের সঙ্গে ইসমাইলের বিয়ে হয়। নিহতের শাশুড়ি ৪০ দিন আগে মারা গেছেন। বিয়ের পর বাপের বাড়ি যাওয়া নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে ইসমাইলের পরিবার জাহেদা আফরিনকে ঝু/ লন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
এই ঘটনায় তারীনের স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। এই ঘটনাটি আত্মহনন না হ/ ত্যা এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নয় পুলিশ। ঘটনার তদন্ত এখনো চলমান। অভিযুক্ত আসামীর বিরুদ্ধে খুনের কোন প্রমাণ পাওয়া গেল তার বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।